পাসের হার কমার নেপথ্যে
খাতা মূল্যায়নে নতুন পদ্ধতি ও গণিতে সৃজনশীল প্রশ্ন-এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার কমার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। বিশ্লেষণে বেরিয়ে এসেছে নকলমুক্ত পরীক্ষা আর সেই সাথে এমসিকিউ-এ ১০ নম্বর কমার প্রভাবে এবার প্রতি ৫ শিক্ষার্থীর এক জন অকৃতকার্য হয়েছেন।
টানা ৭ বছর ৯০ ছুঁই ছুঁই পাসের হারে ছেদ পড়েছে, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি পাচঁ জনের একজন শিক্ষার্থী পেরোতে পারেন নি মাধ্যমিকে বেড়া। ফল প্রকাশের পর, দেশজুড়ে আলোচনায় এটিই।
বিশ্লেষণে বেরিয়ে এসেছে, মূলত ৪ কারনে এবারে কমেছে পাশের হার ও জিপিএ ভাইভের সংখ্যা। যার সবার প্রথমে রয়েছে খাতা মূল্যায়নে নতুন পদ্ধতি। এ ধারায় পরীক্ষকদের মডেল উত্তর ও নম্বর প্রদান নির্দেশিকা দেয়া হয়। যাতে বাড়তি নম্বর না পায় কোনো শিক্ষার্থী।
পাশাপাশি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে সরকারের কঠোর অবস্থান, কমিয়েছে পাসের হার। এর প্রমাণ মিলছে বহিস্কারের চিত্রে। এবার ১ হাজার ১৪৩ জনকে অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। গতবার যা ছিলো মাত্র ৮১১জন।
পাসের হার কমার আরেক কারন গণিতের ফল। বিশ্লেষকরা মনে করছেন ২০১৫ সালে চালু হওয়া সৃজনশীল গণিতে এখনও মানিয়ে নিতে পারে নি পরীক্ষার্থীরা। যার ফলে, অধিকাংশ বোর্ডে গণিতে পাশের হার কমেছে।
এতো দিন ভালো নম্বর পাওয়ার সহজ উপায় ছিলো বহু নির্বাচনী প্রশ্ন বা এমসিকিউ। এ পদ্ধতিটি চালু করা হয় ১৯৯২ সালে ৫০ নম্বরের এমসিকিউ দিয়ে। পরে, ২০১৫ সালে শিক্ষাবিদদের পরামর্শে, ৪০ নম্বরের নামিয়ে আনা হয় এর ব্যপ্তী। আর চলতি বছর আরো দশ নম্বর কমিয়ে ৩০ করা হয় এমসিকিউ।
কয়েক বছরে বাড়তে থাকা পাসের হার ও জিপিএ ভাইভ-এর কারণে শিক্ষাবিদরা অভিযোগ করছিলেন পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি বদলানোর। সেই দাবি মেনেই এবারের এসএসসি ও সমমানের ফল। তবে, শিক্ষাবিদরা পরীক্ষার প্রশ্ন প্রনয়নে আরো কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাস করেছে ৮০.৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৬১ জন।