‘সুপ্রিম কোর্ট থেকে বঙ্গভবন-গণভবনের দূরত্ব মনে হয় কয়েক লাখ কিলোমিটার!
নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশে রাষ্ট্রপক্ষের দীর্ঘসূত্রিতায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দুই সপ্তাহ, দুই মাস বা দুই বছর আপনার কাছে একই। আড়াই বছর ফাইল চলাচলে সময় লাগলো! সুপ্রিম কোর্ট থেকে বঙ্গভবন-গণভবনের দূরত্ব মনে হয় কয়েক লাখ কিলোমিটার! আড়াই বছরে যে পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব হয়নি। আড়াই হাজার বছরেও মনে হয় না তা সম্ভব হবে।’
অ্যাটর্নি জেনারেলের করা দুই সপ্তাহ সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এক সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতি একথা বলেন।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।
আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর ২০১৫ সালের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় শৃঙ্খলা সংক্রান্ত একটি খসড়া বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিমকোর্টে পাঠায়। কিন্তু গত বছরের ২৮ আগস্ট আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ, যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী।
এরপর সুপ্রিমকোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইনমন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একইসঙ্গে ৬ নভেম্বর ২০১৬ এর মধ্যে তা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে জানাতে আইন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়।
গত ৬ নভেম্বর সে অনুসারে মামলাটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি জানাতে না পারায় আপিল বিভাগ বিধিমালা চূড়ান্তের বিষয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তা লিখিতভাবে জানাতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দিয়ে ৭ নভেম্বর ২০১৬ এ বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেছিলেন।
এরপরে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য বেশ কয়েকটি তারিখে সময় বাড়ানো হয়। এরআগে গত ৪ এপ্রিল অ্যাটর্নি জেনারেলের আবার দুই সপ্তাহের সময় আবেদন করলে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এবিষয়ে ৮ মে শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন।