শিক্ষিকা থেকে কিশোর প্রেমিকের স্ত্রী, তারপর ফার্স্ট লেডি
ব্রিজিত থনিও ছিলেন ফ্রান্সের সর্ব কনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাক্রোঁর স্কুল শিক্ষিকা। ঘটনাক্রমে ২৪ বছর বয়সের ব্যবধান হওয়া সত্ত্বেও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। আর মাক্রোঁ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এখন ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডি হবেন এই স্কুল টিচার।
বরাবরই মাক্রোঁ অকপটে স্বীকার করেছেন; তার জীবনে অনুপ্রেরণায় এই স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রীর অবদানের কথা। এপ্রিলে প্রথম দফা নির্বাচনের পর মাক্রোঁ বলেছিলেন, ব্রিজিট থানিও ছাড়া আমি আজকের মাক্রোঁ হতে পারতাম না।
সবকিছু ঠিক থাকলে মাক্রোঁ পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডি হতে চলেছেন ৬৪ বছর বয়সী ৭ নাতি-নাতনিসহ ব্রিজিট থনিও।
ব্রিজিট উত্তর ফ্রান্সের অ্যামিন্স শহরের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্ব কনিষ্ঠ। মাক্রোঁর সাথে দেখা হওয়ার আগে তার জীবন ছিলো গতানুগতিক। স্কুলে তিনি ফ্রান্স সাহিত্য, ল্যাটিন ড্রামা পড়াতেন। প্রথম জীবনে একজন ব্যাংকারকে বিয়ে করেন। সেই স্বামীর ঘরে তিনি তিন সন্তানের জন্ম দেন।
২০০৬ সালে ব্যাংকার স্বামীকে ডিভোর্স দেন। তার এক বছর পর মাক্রোঁকে বিয়ে করে চলে আসেন রাজধানী প্যারিসে। ২০১৫ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে অর্থমন্ত্রী স্বামী মাক্রোঁর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করেন।
ফ্রান্স টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিজিট ছিলেন মাক্রোঁর নির্বাচনের কোচ। রান অফ ভোটের আগে মাক্রোঁর নির্বাচনী বক্তৃতা লিখে দেয়ার পাশাপাশি তা কিভাবে জনসম্মুখে উপস্থাপন করা হবে সে বিষয়েও নির্দেশনা দিতেন।
ওই প্রতিবেদনে ব্রিজিট থনিও বলেন, ‘আমাকে সবদিকে খেয়াল রাখতে হতো। নানা দিক থেকে মাক্রোঁকে নিরাপদে রাখতে আমাকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হতো।’
মাক্রোঁ ও ব্রিজিটের প্রেম ও দাম্পত্য জীবন:
মধ্য-বামপন্থীর ফ্রান্সের সর্ব কনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ স্ত্রী তার হাইস্কুল টিচার, বয়সের ব্যবধান ২৪ বছর, স্ত্রীর আগের ঘরের স্বামীর ৩ সন্তানকে নিয়েই তাদের দাম্পত্য জীবন ।
অসাধারণ বিচক্ষণতা, বুদ্ধিমত্তা আর প্রজ্ঞা দিয়েই ছোট বেলা থেকেই সবার শ্রদ্ধা অর্জনে সক্ষম হন মাক্রোঁ। ফ্রান্সের ছোট্ট শহর অ্যামিন্স-এর এক হাইস্কুলে পড়ার সময় তার ড্রামা টিচার ছিলেন ব্রিজিট থনিও।
ড্রামা ক্লাসের শেষ বর্ষের একটি নাটক একসাথে লেখার জন্য এই শিক্ষকের সাথে দেখা করেন। তখন ব্রিজিট ভেবেছিলেন নাটকটি বেশি দূর এগুবে না। কারণ ছাত্র তার উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছাত্রের বুদ্ধিমত্তার কাছে পরাজিত হন তিনি। এই কিশোর ছাত্রের অসাধারণ ব্যক্তিত্ব আকর্ষণীয় হয়ে উঠে তার কাছে। প্রেমে পড়ে যান।
ব্রিজিটের বিচ্ছেদের সময়গুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা হতো তাদের মধ্যে। এক পর্যায়ে মাক্রোঁর প্রজ্ঞা-বিচক্ষণতার ঐশ্বর্যে ডুবে যান তিনি। এরপর আগের ঘরের ৩ সন্তানকে নিয়ে মাক্রোঁর সাথেই থাকতে শুরু করেন। ২০০৭ সালে এই জুটি বিয়ে করেন।
মাক্রোঁর জীবনের এমন উত্থান নিয়ে বই লিখেছেন আন্নে ফুদা তিনি বলেন, ‘এটা এক বিরল প্রেমের গল্প যা এম্যানুয়েল মাক্রোঁর একাগ্রতা এবং আত্মবিশ্বাসেরই পরিচায়ক।