আপন জুয়েলার্সের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়:রেইনট্রির বিষয় দেখবে পুলিশ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত একজনের বাবার মালিকানাধীন আপন জুয়েলার্সের অর্থের উৎস ‘নিশ্চয়ই অর্থ মন্ত্রণালয় দেখবে’ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন।
শনিবার রাজধানীর চকবাজারে আজাদ বালুর মাঠে আয়োজিত মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতার পর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
আপন জুয়েলার্সের অর্থের উৎসের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন: এ বিষয়টি আমাদের আওতায় নয়। এ বিষয়ে নিশ্চই অর্থ মন্ত্রণালয় দেখবে। আমাদের দায়িত্ব যেটা আমরা সেটা করব।
বনানীতে ধর্ষণের ঘটনায় তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রেইনট্রি হোটেলের বিরুদ্ধে অভিযোগও গুরুত্বসহ দেখা হচ্ছে।
পুলিশ এরইমধ্যে দুই অভিযুক্ত ধর্ষককে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আপন জুয়েলার্সের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বিষয়ে খোঁজ-খবর করছে অর্থ মন্ত্রণালয় আওতাধীন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রেইনট্রি হোটেল বিষয়ে তদন্ত করছে। আলাদাভাবে ধর্ষণের ঘটনা তদন্ত করছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
জঙ্গি রেজোয়ান বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
জঙ্গি নেতা রেজোয়ান যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছে বলে শোনা যাচ্ছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন: জঙ্গি দমনে পুলিশ যেভাবে কাজ করছে সারাবিশ্ব জিজ্ঞাসা করছে আমরা কিভাবে এতো সফলতার সাথে জঙ্গি দমন করছি।
‘এ বিষয়টিও আমাদের নজরদারীতে আছে, তথ্য অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জঙ্গিবাদ ও মাদকবিরোধী লড়াই চলবে
জঙ্গিবাদ ও মাদকের উত্থান হতে দেব না এমন ঘোষণা দিয়ে অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, কেউ যদি মাদকের ব্যবসা করে তার পরিণাম ভয়বহ হবে বলে গেলাম।
‘মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আগে ছিল ঠুঁটো জগন্নাথের মত। এখন এই অধিদপ্তরকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। যেভাবেই হোক মাদককে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসব।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে বর্তমানে কারাগারের ২০ শতাংশ বন্দীই মাদক সংক্রান্ত অপরাধে কারাগারে আছে বলে জানান তিনি।
সমাবেশে খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে বিএনপি সারাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাস কায়েমের পাশাপাশি দেশকে মাদকের অভয়ারণ্য করে গড়ে তুলেছিল।
তিনি বলেন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯৬ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ শুরু করেছিলেন। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর একদিকে মাদকের অভয়ারণ্য এবং অন্যদিকে সন্ত্রাসের জনপদ গড়ে তোলা হয়, জঙ্গিবাদকে পেলে-পুষে বড় করা হয়।
অনুষ্ঠানে পুলিশের আইজি এ কে এম শহীদুল হক জানান, এখন পর্যন্ত সারাদেশে ১৫টি জঙ্গিবিরোধী অভিযানে ৬৫ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে।
‘যেখানেই জঙ্গিরা সংগঠিত হচ্ছে সেখানেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী হানা দিচ্ছে।জঙ্গিরা বুঝতেই পারছে না এতো গোপনীয় কর্মকাণ্ড পুলিশ কিভাবে টের পাচ্ছে।’
নিজের নিরাপত্তার জন্য প্রতিবেশীর খবর জানা জরুরী উল্লেখ করে আইজিপি বলেন: প্রতিবেশী যদি জঙ্গি হয়, তাহলে পুলিশ অভিযান চালালে আপনার জীবনও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। কোন প্রতিবেশীর অস্বাভাবিক আচরণ দেখলে পুলিশে খবর দিন।
শুধু পুলিশ দিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য ব্যপক জনসম্পৃক্ততা দরকার। সবার আগে পরিবার থেকে এ উদ্যোগটা নিতে হবে। আপনার সন্তান যেন মাদক-জঙ্গিবাদে জড়িয়ে না যায়, সেজন্য সন্তান কোথায় যাচ্ছে কার সাথে যাচ্ছে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়েও মাদক ও জঙ্গিবাদের কুফল নিয়ে একটি অধ্যায় রাখার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে যেন শিশুরা ছোটবেলা থেকেই এর ভয়াবহতা সম্পর্কে জনতে পারে।
সমাবেশে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ লালবাগ জোনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।