রাজধানীসহ সারাদেশ প্রচণ্ড তাপদাহ আর লোডশেডিংয়ে পুড়ছে
প্রচণ্ড তাপদাহ আর আচমকা লোডশেডিংয়ে পুড়ছে রাজধানীসহ সারাদেশ। এই অস্বস্তিকর গরম থেকে আপাতত রেহাই নেই, এমনটাই জানাচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তপ্ত হয়ে উঠেছে রাস্তাঘাট। রোদে খাঁ-খাঁ করছে সড়ক জনপদ। বাইরে বের হলেই মনে হচ্ছে অগ্নিকুণ্ড। গরম বাতাস শরীরে বিঁধছে আগুনের হলকার মত। দিনের গরমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিং। দুঃসহ গরমে মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিরও হাঁসফাঁস অবস্থা।
দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু যা বর্ষাকে নিয়ে আসবে, তা এখনও অনেক দূরে বঙ্গোপসাগরেই আটকে আছে। কালবৈশাখীর ঝড়-বৃষ্টিতে যে গরম থেকে সাময়িক স্বস্তি মিলবে, সেরকম পরিস্থিতি এখন আবহাওয়ামণ্ডলে নেই। সংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণাবর্ত তো দূরের কথা, কোনও নিম্নচাপ অক্ষরেখা নেই।
সারাদেশের দিনের তাপমাত্রা সামান বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানায়। ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে বহমান তাপমাত্রা অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে শনিবার থেকে শুরু হওয়া তাপদাহের কারণে এই উচ্চ তাপমাত্রা আরো কিছুদিন বহাল থাকবে। রবিবার যশোরে দেশের সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরের উপর উচ্চচাপ বলয় জলীয় বাষ্পকে ঠেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরমে রবিবার জেরবার হতে হয়েছে।
দিনভর তেতেপুড়ে যাওয়া গরমের সঙ্গে ঘর্মাক্ত, অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। তাতে নাজেহাল অবস্থা গোটা দেশ জুড়ে। ভারতের বিহারে ‘লু’ হাওয়া বইছে। আগামী দিন দুয়েক এরকম চলবে। ‘লু’–এর পরিস্থিতি গড়ে উঠতে পারে রাজশাহী অঞ্চলের জেলাগুলিতে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্র বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এছাড়া সারাদেশের দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে । ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে বহমান তাপমাত্রা অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে বর্ষা এখন আটকে থাকলেও ফের তার অগ্রগতি শুরু হবে বলে আশা করছেন আবহাওয়াবিদরা। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হতে চলেছে। এটির প্রভাবে কয়েকদিনের মধ্যে বর্ষা অগ্রসর হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম, দক্ষিণ-পূর্ব, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঢুকে পড়বে বলে তারা মনে করছেন। এতে দেশের মূল ভূখণ্ডে বর্ষার ঢুকে পড়ার প্রক্রিয়া ত্বরাণ্বিত হবে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া দপ্তরের আশা, নির্ধারিত পয়লা জুনের আশপাশেই ভারতের কেরেলায় বর্ষা পৌঁছাবে। কেরেলায় ঠিক সময়ে বর্ষা এলেই তা নির্ধারিত সময় অর্থাৎ জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছাবে, তবে তাও নির্ভর করছে মৌসুমি বায়ুর মতিগতির উপর।