মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে দালালচক্রের উপদ্রব বৃদ্ধি
আল-আমীন,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। লোকবলের অভাবে হাসপাতাল নিজে রোগী হয়ে পয়েছে। তার উপর হাসপাতালের চিকিৎসা সেবাকে পুজি করে গড়ে উঠেছে দালালচক্র। হাসপাতালের কতিপয় দুপক্ষ কর্মচারীর সহযোগিতায় সক্রিয় হয়ে উঠেছ্ েদালালচক্র । হাসপাতালের ভর্তি রোগী বাইরের ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রায় দুই পক্ষের মধ্যে টানাটানির প্রতিযোগিতা দেখা যায়। বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে নিয়োজিত অজ্ঞাত ৩ ডজন দালাল হাসপাতালের রোগীদের ভালো চিকিৎসার কথা বলে ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর জন্য হাসপাতাল কর্মকর্তাবৃন্দ বিব্রোতবোধ হয়ে থাকেন। হাসপাতাল অফিস সূত্রে জানা যায়, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল ২৫০শয্য বিশিষ্ট নামে থাকলেও ১০০ শয্য বিশিষ্ট কার্যক্রম চালু আছে। ফলে ১০০ বেড়ের লোকবল দিয়ে ২৫০ বেড়ের নামমাত্র চিকিৎসা সেবা চলছে। ফলে রোগীদের দুভোর্গ দৈনন্দিন পোহাতে হয়। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মুঞ্জুরীকৃত রাজস্ব পদের সংখ্যা ২০৭ জন। উন্নয়ন খাতে ৭জন । শূন্যপদ রয়েছে রাজস্বখাতে ৬৭জন। চিকিৎসা সেবার জন্য জরুরী পদ শূন্য রয়েছে। এগুলো হলো সিনিয়ার কনসালটেন্ট (সার্জারী), সিনিয়র কনসালটেষ্ট (কার্ডিওলজি), জুনিয়র কনসালটেষ্ট(অর্থোসার্জারী), জুনিয়ার কনসালটেষ্ট(প্যাথলোজি), জুনিয়ার কনসালটেষ্ট (রেডিওলজি) ও জুনিয়ার কনসালটেষ্ট( চর্ম ও যৌন)। ৫০ শয্যা হাসপাতাল থাকা কালীন ৪জন সুইপার পদ মঞ্জুরী ছিল । ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের হওয়ার পর লোকবল সৃষ্টি হয়নি। ফলে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতার ৪জন সুইপার বর্তমানে ৭০০ রোগীর ময়লা আর্বজনা পরিস্কার করতে হয়। ৪জনের স্থলে আবার ১জন পদ শূন্য রয়েছে। বরাদ্দকৃত ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের খাবার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের রোগীদের মাঝে সরবরাহ করতে হয়। হাসপাতালের জেনারেটর অকেজো, এক্সে মেসিন ও আট্রাসোনো মেসিন দীর্ঘদিন অকেজো হয়ে পড়ে আছে । হাসপাতালের হাজারো সমস্যা সমাধানের দিকে নজর না দিয়ে কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দলাদলী একে অপরের ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। হাসপাতালের একপক্ষের প্ররোচনায় দালালদের সহায়তায় চিকিৎসাসেবা নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যয়ে গত ১০ জুন হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার এহসান কে লাঞ্জিত করে একদল যুবক। সেবার মনোভার নিয়ে এ হাসপাতালে দীর্ঘদিন চাকুরি করছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অফিস সহায়ক শাহ আলম। তিনি দুরদুরান্ত থেকে হাসপাতালে আসা রোগীদের হাসপাতালের ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা সেবাই সাহায্য করে থাকেন। তার কাজো অসাধূ কিছু কর্মচারিী ও দালালচক্রের প্রতিবন্ধীতা সৃষ্টি করায় তার নামে হাসপাতালে ভুয়া অভিযোগ তুলেছে। বিভিন্নভাবে শায়িস্থা এমনকি পুলিশ দিয়ে ক্ষতি করার চেষ্ট করছে বলে এইমুক্তিযোদ্ধার সন্তান শাহ আলম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন। এব্যাপারে হাসপাতাল চলাকালিন ডাক্তারের চেম্বারে দেখা হয় ডাক্তার শরিফুল ইসলাম ও পৃথক চেম্বারে ডাক্তার লিপু সুলতান-এর সাথে। দালালচক্র সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ডা: শরিফুল বলেন, আমি ৩বছর হাসপাতালে কর্মরত আছেন। অফিস সহায়ক শাহ আলম দরিদ্র রোগীদের সাহায্য করে, দালালদের বিপক্ষে রয়েছে। ডা: লিপু সুলতান বলেন, তিনি হাসপাতালে ৫বছর কর্মরত আছেন। শাহ আলম ন্যয় ও সত্যের পক্ষে রয়েছে। সে রোগীদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার জন্য ব্যবস্থা করে। এই জন্য দালালচক্র তার পিছে লেগেছে। যেকোন সময় দালালচক্র তার ক্ষতি করার সম্ভবনা রয়েছে। দালালদের প্রশাসনিকভাবে দমন করা জরুরী হয়ে পড়েছে। হাসপাতাল কতৃপক্ষ দালালচক্রের কাছ একপ্রকার জিম্মি হয়ে রয়েছে বলে একাধীক রোগীদের কাছ থেকে জানা গেছে। হাসপাতালের সামনে ১২টি ওষুধের দোকান আছে। সেখানে দালালরা বসে থাকে। হাসপাতালে কোন রোগী আসলে চিলের দৃষ্টিতে দালালরা রোগীদের লক্ষ করে। রোগী ভর্তিহলে রোগীর ওষুধের তালিকা কতিপয় নার্স ও আয়ার মাধ্যমে দালালদের হাতে চলে যায়। রোগীর উপস্থিত চিকিৎসার পরে দালালদের তৎপরতা শুরু হয়। এক পর্যায়ে হাসপাতালের কিছু কর্মচারীদের সহযোগীতায় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভালো চিকিৎসা সেবা দেবার জন্য নিয়ে যায়। এর বিনিময়ে কতিপয় নার্স, আয়া ও কর্মচারীরা কমিশন পেয়ে থাকে। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মিজানুর রহমান জানান, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনালের হাসপাতালের অবকাঠামোতে চলছে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের কার্যক্রম। ফলে রোগীদের ওষধপত্র, চিকিৎসা সেবা, রোগীদের খাবার ও ময়লা পরিস্কারে ব্যাপক অসুবিধা হচ্ছে। বাইরের দালালদের চাপে হাসপাতালের কিছু কর্মচারী নাজেহাল হচ্ছে বলে শিকার করলেন। তিনি ২৫০শয্য হাসপাতালের কার্যক্রম চালু ও পদ মঞ্জুরী করলে চিকিৎসা সেবার মান বাড়বে বলে মন্তব্য করেন।