বিএনপি নেতাদের মিথ্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেছে: হাছান মাহমুদ
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম, মওদুদ, গয়েশ্বর ও রিজভীর মিথ্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেছে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিএনপির নেতাদের উদ্যেশে বলেন, বলি এবার এই মিথ্যাচারটা একটু কমান।
তিনি বলেন, ‘মিথ্যার রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না। সন্ত্রাসের রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম মিথ্যাচারের জন্য ইদানিং মিথ্যা ফখরুলে রূপান্তরিত হয়েছেন। অনেকে বলেন, দেশে অনেক হিন্দু রাজাকার আছে আমি বলতে চাইনা যে গয়েশ্বর বাবু রাজাকার ছিলেন। তিনি যেসব কথাবার্তা বলছেন তাতে মনে হচ্ছে, তিনি দিনে বেতাল হয়ে যাচ্ছেন। অনেকে তো রাতে বেতাল হয়, তিনি দিনে বেতাল হয়ে যাচ্ছেন।’
মওদুদ আহমেদ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মওদুদ আহমেদ ডিগবাজির রাজনীতির যে সক্ষমতা দেখিয়েছেন, তা কম রাজনীতিবিদদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে। শুধু ডিগবাজী নয়, জালিয়াতির ক্ষেত্রে তিনি যা দেখিয়েছেন তা বিরল। বাড়িটি নিয়ে যে জটিলতা সেটি নিয়ে তিনি নিম্ন আদালতে হেরেছেন, সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে হেরেছেন। সব জায়গা থেকে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর তিনি আবার রিভিউ পিটিশন দিয়েছিলেন, সেখানেও তিনি হেরেছেন।’
‘জালিয়াতি কোন পর্যায়ে দেখুন বাড়িটির মালিক অষ্ট্রিয়ার নাগরিক ইঞ্জে ফ্লাটজ ১৯৮৫ সালের মার্চ মাসের ৩০ তারিখ মারা যান আর তার পক্ষে মওদুদকে লিখে দিয়েছে ১৯৮৫ সালের আগস্ট মাসের ১০ তারিখ। মহিলার মৃত্যুর ৭ মাস পরে কীভাবে সে অনুমতি দেন। এই কাজটি মওদুদ করেছেন। এই জালিয়াতি নয়, মহিলার ডেথ সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রেও জালিয়াতি করা হয়েছে। এই সব কিছু আদালতের বিচারে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে বলেই তিনি উৎখাত হয়েছেন। আমরা ভেবেছিলাম এসবের পরে তার বক্তব্যে কিছুটা পরিবর্তন আসবে কিন্তু আসে নি।’
হাছান মাহমুদ আরো বলেন, গতকাল তিনি (মওদুদ) একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, রাঙ্গুনিয়ার ঘটনায় যে সিনজি চালক মামলা করেছে সে নাকি আওয়ামী লীগের কর্মী। তাকে নাকি আমরা সিএনজি চালক বানিয়েছি। এই সিনজি চালক মোহাম্মদ মুহসীন প্রকৃত অর্থে একজন সিএনজি চালক, তিনি আওয়ামী লীগের নেতা কিংবা কর্মী নন। এমনকি তিনি যে সিএনজি সমিতির নির্বাচন হয়েছে, সে নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থীও ছিলেন। সুতরাং এ ব্যাপারে তিনি যে মিথ্যাচার করেছেন সেটি প্রমাণ করেছে জালিয়াতির পাশাপাশি তিনি মিথ্যাচারেও পারদর্শি।’
‘সেদিন যখন ঘটনা ঘটে তখন আমি ঢাকায়। সকাল সাড়ে ১০ টার ফ্লাইটে আমি চট্টগ্রাম গিয়ে পৌঁছি সোয়া ১টায়। এয়ারপোর্ট থেকে রাঙ্গুনিয়ায় যেতে সময় লাগে প্রায় ৩ ঘন্টা। রাঙ্গুনিয়ায় যেতে সাড়ে ৩টা বেজে যায়। আসলে বর্তমানে বিএনপির কাছে কোনো ইস্যু নাই। পুলিশকে তারা ইনফরম করেছিল তারা রাঙ্গামাটি হয়ে যাবেন। সে অনুযায়ী পুলিশ রাঙ্গামাটি রোডে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে রাখে। আমি নিজে রাঙ্গুনিয়া থানাকে বলেছি, তাদের যেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়। কিন্তু তারা যে রোড পরিবর্তন করেছে সেটা তারা পুলিশকে জানায় নি। রাঙ্গামাটি রোড থেকে কাপ্তাই রোডে আসতে স্বাভাবিকভাবে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা। পুলিশ দ্রুত গতিতে এসে তাদের নিরাপদের পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। কিন্তু তারা তা নেয় নি। তারা চট্টগ্রাম শহরে এসে সংবাদ সম্মেলন করেন।
তিনি বলেন, পাহাড়ী মানুষেরা পাহাড় ধসে যখন বিপর্যস্থ হয়। তখন তাদের বলেছিলাম ঢাকায় বসে সংবাদ সম্মেলনে করে আওয়ামী লীগকে দোষারোপ না করে, সেখানে যান মানুষকে সহায়তা করুন। কিন্তু তারা যায় নি। তারা ঘটনার এক সপ্তাহ পরে যায় কিন্তু কোনো প্রকার ত্রাণ না নিয়ে। অর্থাৎ গাড়িতে কোন ত্রাণ ছিল না। এখানেই রহস্য। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা নিন্দনীয় কাজ করেছে। আমরা এসবের নিন্দা জানাই। কিন্তু ঘটনা নিয়ে নাটক সাজানো হয়েছে কি না সে রহস্য থেকেই গেল।