আপাতত স্থগিত পশ্চিমবঙ্গে এরশাদের জন্মভিটা দখল করে মন্দির তৈরি
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহারে পূর্বপুরুষের সম্পত্তি রক্ষায় মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে আবেদন করে ফল পেয়েছেন বলে মনে করছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। পশ্চিমবঙ্গের ওই বাড়িতে এখনও থাকেন এরশাদের দুই চাচাতো ভাই এবং তার পরিবারের সদস্যরা, যা জোর করে দখলের চেষ্টা করে মন্দির তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
মমতাকে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধের পর জায়গা দখল করে মন্দির গড়ার উদ্যোগ ভেস্তে গেছে বলেই মনে করেন এরশাদ।
গত ফেব্রুয়ারিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেগপূর্ণ এক চিঠিতে এরশাদ দাবি করেন, কুচবিহার জেলায় তার পরিবারের পূর্বপুুরুষের সম্পত্তি জোড় করে দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই সম্পত্তির অন্তর্গত খোলা মাঠে অবৈধভাবে একটি মন্দির নির্মাণের তোড়জোড় চলছে জানিয়ে তা বন্ধ করতে মমতার সাহায্য চান। জেলার দিনহাটা সাবডিভিশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এরশাদের পূর্বপুরুষের এই সম্পত্তি অবস্থিত।
এরশাদের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হলেও তার পরিবার অসহায়বোধ করছেন বলে চিঠিতে জানিয়েছিলেন এরশাদ।
মমতাকে অনুরোধ জানিয়ে লেখা এই চিঠির কোন উত্তর এখনও পাননি বলেও জানান এরশাদ। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য হিন্দুর সাথে ফোনালাপের সময় এমনটি জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু আমার মনে হয় তিনি (মমতা) স্থানীয় প্রশাসনের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেছেন। কারণ এখন আমার পরিবারকে আর কেউ বিরক্ত করেনা। আমার মনে হয় মন্দির নির্মাণ কাজও স্থগিত করা হয়েছে।
এরশাদের একজন ভাতিজা জাকারিয়া হোসেইন অবশ্য জানিয়েছেন, তারা এখনও হুমকির মধ্যে রয়েছেন। “এই এলাকার প্রভাবশালী লোকজন জমিটি অধিগ্রহণ করতে চায়, যা প্রায় ৭০ ডেসিমেল (৩০ হাজার স্কয়ার ফিট)। স্থানীয় বয়েজ ক্লাবের মাধ্যমে এই লোকগুলো তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং এর আগে তারা এই জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য সামান্য কিছু অর্থ দিতে চেয়েছিলো। আমরা তা গ্রহণ করিনি এবং এখনও পরোক্ষভাবে হুমকি পেয়ে আসছি।”
জাকারিয়া অভিযোগ করেন, এই ক্লাবের সদস্যদের উদ্দেশ্য এখানে একটা আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা।
এবিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু দ্য হিন্দুর পক্ষ থেকে কুচবিহারের সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে চাননি। সেই ক্লাবের সদস্যদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় সংবাদ মাধ্যমটি।
হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ কুচবিহারের নিজের জন্মভিটা ছেড়ে গেছেন ৭০ বছর আগে। কিন্তু এখনও এখানকার সাথে তার বন্ধন অটুট রয়েছে। প্রায় প্রতিবছরই তিনি এখানে তার আত্মীয়দের বাড়িতে ঘুরতে যান। এখানকার সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সাথেও সাক্ষাৎ করেন তিনি। শেষবার এখান থেকে ঘুরে আসার পরে তিনি মমতাকে ওই চিঠিটি লিখেছিলেন।