যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারির তালিকায় বাংলাদেশ মানবপাচার ইস্যুতে
মানব পাচার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে নজরদারির তালিকায় রাখায় জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাচার বন্ধে দ্রুত সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন তারা। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পাচার রোধে নেয়া উদ্যোগসমূহ পর্যালোচনা না করেই বাংলাদেশকে নজরদারির তালিকায় রাখা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মানব পাচার বিষয়ক প্রতিবেদন 'ট্রাফিকিং ইন পারসনস' প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। এতে, বাংলাদেশী পুরুষ ও নারী কর্মীদের জোর করে কাজে বাধ্য করার পাশাপাশি, যৌন নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়। মানব পাচার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করার অভিযোগে, বাংলাদেশকে এক ধাপ নামিয়ে, দুই নম্বর ধাপের নজরদারির তালিকায় রাখা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন প্রতিবেদনে দেশের মর্যাদাহানির পাশাপাশি জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বায়রার সাবেক মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, 'আমরা এটা নিয়ে অত্যান্ত সতর্ক। আমাদের পাঠানো একটাও নারী যেনো অসুবিধায় না পড়ে।'
ভালোবাসি বাংলাদেশের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর মো. আল-আমিন নয়ন বলেন, 'বিদেশে যেতে হলে কি কি কাগজ পত্র থাকতে হয় সেগুলো যদি জনশক্তি কর্মসংস্থান অফিস থেকে সচেতন করা হতো। তাহলে এই পাচার হয়তো কমতো।'
তবে, মানব পাচার কিংবা শ্রমিকদের যৌন নির্যাতনে বাধ্য করার ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোও কম দায়ী নয় বলে মন্তব্য করেন অভিবাসী বিশেষজ্ঞরা।
রামরুর চেয়ারপারসন ড. তাসনীম সিদ্দিকী বলেন, 'ব্যাপক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন এখানে চলছে। এইগুলোর তো একটা ইতিবাচক আউটকাম থাকা উচিৎ। সরকারকে দায়ি করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা যেভাবে কাজ করছে সেটাকেও দায়ি করতে পারি। অন্যদিকে যেসব এনজিও কাজ করছে ট্রাফিকিং নিয়ে তাদেরও ঘাটতি বলতে পারি।'
মানব পাচার বন্ধে এখনি সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দেন তারা।
ড. তাসনীম সিদ্দিকী বলেন, 'স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে ২২ জনের লিস্ট তৈরি করেছিলেন পার্লামেন্টের সদস্য পর্যন্ত নাম সেখানে ছিলো। সেটার তদন্ত কিন্তু হয়নি।'
এদিকে, মানব পাচার রোধে বাংলাদেশ তৎপর রয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন তথ্যনির্ভর নয়।
তিনি বলেন, 'তাদের স্টেট ডিপার্টমেন্ট আমাদের এক ধাপ নামিয়ে দেয়া, আমি মনে করি তথ্যের কিছু অভাব রয়েছে। আমি মনে করি তাদের এই ভুল ভাঙবে।'
যাদেরকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বিচার কাজ চলছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।