নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে নদী ড্রেজিংয়ের বালু লুট
শাহ মো: জিয়াউর রহমান,নীলফামারী Channel 4TV :
সরকারের নদী ড্রেজিং প্রকল্পের মজুদ করে রাখা বালু লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার যুমনেশ্বরী নদীতে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বালুলুট থামাতে পুলিশ অভিযান চালালে বালু ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে পুলিশ ট্রাক লোডের ভেকু মেশিনের চাবী ও দুই ট্রাক বালুসহ ট্রাক নিয়ে থানায় আসে।
জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার যমুনেশ্বরী, চিকলী ও চারালকাটা নদীর চর ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের মাধ্যমে স¤প্রতি ৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে নদী গুলো ড্রেজিং করা হয়। এরমধ্যে যমুনেশ্বরীর নদীর বেইলি ব্রীজ এলাকায় ১০০০ মিটার, চারালকাটা নদীর নিতাই পানিয়াল পুকুর এলাকায় ৭৫০ মিটার, তারাগঞ্জের যমুনেশ্বরী নদীর জয়বাংলা রহিমাপুর এলাকায় ৭৫০ মিটার এবং বদরগঞ্জের যমুনেশ্বরী নদীর মাধাই খামার এলাকায় ১০০০ মিটার চর ড্রেজিং এর বালুরস্তুপ্ত করে রাখা হয়। যা নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডারের মাধ্যমে ওই সব বালু বিক্রি করার কথা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, হঠাৎ করে বুধবার (৫ জুলাই) ভোর হতে ওই সব স্তুপ করে রাখা বালুগুলো ট্রাকে ট্রাকে লোড করে পাচার করা শুরু করে। বুধবার সকাল হতে গভীর রাত পর্যন্ত ১১৩ ট্রাক বালু পাচার করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা গোপাল চন্দ্র এবং জামায়াত শিবিরের বেশ কিছু প্রভাবশালী। প্রতি ট্রাক বালু তারা বিক্রি করে ৮০০টাকা করে। বৃহস্পতিবার সকালে ১১ টি ট্রাকেও বালু পাচার করা হয়। এ দিন দুপুরে আরো চারটি ট্রাকে বালু পাচারের সময় পুলিশ এসে ট্রাক ভর্তি বালু ও ট্রাকে বালু লোড করা ভেকু মেশিনের চাবি নিয়ে থানায় আসে।
নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায় বালুলুটের ঘটনাটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অবগত করা হয়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর হতে নীলফামারী প্রশাসনকে জানালে প্রশাসনের নির্দেশে কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় বালু লুটের সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালীরা পালিয়ে যায়।
এ ব্যপারে বালু ব্যবসায়ী ও আওয়ামীলীগ নেতা গোপাল চন্দ্র বলেন, সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী সাজুর সাথে অলিখিত চুক্তি করে বালু বিক্রি করা হচ্ছিল।
কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি বজলুর রশীদ বলেন , পুলিশ সেখানে গেলে বালু ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে ট্রাকভর্তি বালু থানায় এনেছি।
সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুস শহীদ জানান, চর ড্রেজিংয়ের বালু কেউ বিক্রি করতে কিংবা নিজের কাজে ব্যবহার করতে পারবে না। সেই বালু গুলো টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। কিন্তু একটি প্রভাবশালী মহল বালুলুটপাট শুরু করায় পুলিশের হস্তক্ষেপে তা বন্ধ করা হয়েছে।