গাংনীতে বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণের অপচেষ্টা ঘটনা ধামাচাপা দিতে একটি পক্ষ মরিয়া।
মেহেরপুর প্রতিনিধি : গাংনীর পল্লী বাহাগুন্দা গ্রামে বাড়ী থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে পার্শ্ববর্তী মাঠে গৃহবধূকে ধর্ষণের অপচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। গৃহবধূর চিৎকারে পরিবারের লোকজন ও গ্রামের লোকজন ধাওয়া করে অপহৃত গৃহবধূকে উদ্ধার করে।গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে বাহাগুন্দা গ্রামের নেলুর বিলের মাঠে এই লাম্পট্যের ঘটনা ঘটে। এসময় নারীলোভী লম্পট পার্শ্ববর্তী ঢেপা গ্রামের হারেজ আলীর ছেলে ইরফান আলীকে (৪৫) ধরে ফেললেও আরও ২ জন লম্পট একই গ্রামের মৃত আব্বাস আলীর ছেলে সাদ্দাম ও কাওছার আলীর ছেলে মুনির পালিয়ে যায়।ঢেপা ও যুগিন্দা গ্রামের লোকজন মাঠ থেকে ধৃত লম্পট ইরফান আলীকে যুগিন্দা বাজারে নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে লাম্পট্যের ঘটনা স্বীকার করে এবং তার সহযোগী ২জন লম্পটের নাম প্রকাশ করে।ঘটনা উভয় গ্রামে জানাজানি হলে সালিশ মিমাংসার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে গাংনী থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এস আই ফরহাদ হোসেন ও কনষ্টেবল লিটন এসে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর নিকট থেকে অভিযুক্ত লম্পট ইরফানকে থানায় নেয়ার কথা বলে একজন সাংবাদিকের কথামত ছেড়ে দেয়া হয়।
এনিয়ে গ্রামবাসী এবং গ্রামের মাতব্বরগণ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে গাংনী থানার ওসি মহোদয় আনোয়ার হোসেনের সাথে সব ঘটনা খুলে বলে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান।ঘটনার বর্ণনা এবং বাস্তবতা জানতে ভিকটিম গৃহবধূ বাহাগৃন্দা গ্রামের ম্যাগা মন্ডলের মেয়ে ও আনসার আলীর স্ত্রী রোজিনা খাতুনকে থানায় এসে এজাহার করার পরামর্শ দেন গাংনী থানার ওসি আনোয়ার হোসেন। ঐ রাতেই গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিগণের সিদ্ধান্ত ক্রমে গৃহবধূ রোজিনাকে গাংনী থানায় হাজির করা হলে উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে উল্টো রোজিনাকে নানা অপবাদ দিয়ে এমনকি নষ্টা মহিলা বলে অভিযুক্ত লম্পট ইরফান ও রোজিনাকে থানা হাজতে অন্যায়ভাবে আটক করে রাখে।
রোজিনার বাবা ম্যাগা মন্ডল জানান,আমার মেয়েকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে মাঠের মধ্যে ধর্ষনের অপচেষ্টা চালালেও প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার পেলাম না। আমি ন্যায্য বিচার চাই।
যুগিন্দা গ্রামের ইউপি সদস্য আবু জাফর জানান, সত্য ঘটনা ধামাচাপা দিতে একটি মহল ওসি মহোদয়কে ভুল বুঝিয়েছেন। গৃহবধূকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ধর্ষণের ঘটনা আড়াল করতেই রোজিনার মামলা না নিয়ে জেল হাজতে পাঠানো ঠিক হয়নি। আমরা গ্রামবাসী এই অন্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। লম্পট ইরফানের কাছে ৩ টি যৌন ্উত্তেজক ট্যাবলেট পাওয়া গেলেও তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এই ৩ জনের মধ্যে মুনির হোসেনের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। তার নোংরা ও দিগম্বর ছবিও গ্রামের অনেকের মোবাইল ফোনে দেখা গেছে। আমরা আইনি লড়াই করবো।পরদিন অর্থ্যাৎ আজ মঙ্গলবার সকালে ঢেপা ,বাহাগুন্দা ও যুগিন্দা গ্রামের মেম্বর আবু জাফর, কামরুল ,আনোয়ার হোসেন ও মুক্তারুল গাংনী থানায় বসে এসআই সুফল কুমারের পরামর্শে উভয় পরিবারের সিদ্ধান্ত মতে আপোষ মিমাংসার উদ্যোগ গ্রহণ করলে ৫০ হাজার টাকায় দফা রফা হয়। আপোষ মিমাংসার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে গেলে গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ সব ফয়সালা বানচাল করে দিয়ে উপর মহলের চাপের দোহায় দিয়ে লম্পট ইরফান আলী কে ৫৪ ধারায় এবং নিরপরাধ গৃহবধূ রোজিনাকেও ৫৪ ধারায় জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।
এব্যাপারে গাংনী থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, ধর্ষনের অপচেষ্টার ঘটনা সত্য, তবে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে মেয়েটা চরিত্রহীনা। তাই ২জনকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।