অ্যাথলেটিক্সের পিস্তল নিয়ে ‘সাপ-লুডু’!
‘আমি যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন পিস্তলগুলো পাইনি। আমার কাছে নেই। ওসব তো প্রেসিডেন্টের কাছেও থাকতে পারে।’
‘বললেই হবে না। দায়িত্বে যখন উনি ছিলেন, তখন ওনার কাছেই আছে। এসব ওনার দায়িত্বের ভেতর পড়ে।’
প্রথম বক্তব্য বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম চেঙ্গিসের। দ্বিতীয় বক্তব্য অ্যাডহক কমিটির নবনিযুক্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টুর।
ফেডারেশনের পিস্তলসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস নিয়ে দুপক্ষ এভাবে ‘সাপ-লুডু’খেলছে। চ্যানেল আই অনলাইন জানার চেষ্টা করেছে আসলে পিস্তলগুলো কোথায় আছে।
ফেডারেশনটির আগের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন কমিটি গত ১৫ মার্চ দায়িত্ব গ্রহণ করে। দায়িত্ব নেয়ার পর মন্টু খেয়াল করেন চারটি স্টার্টার পিস্তলসহ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেকবই, স্টোররুমের গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিসপত্র ঠিকঠাক নেই। তখন তিনি আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদককে সবকিছু বুঝিয়ে দিতে অনুরোধ করেন।
দৌড় কিংবা হার্ডলসের মতো অ্যাথলেটিক্স ইভেন্ট শুরু করতে স্টার্টার পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়। নিখোঁজ পিস্তলগুলো অনেকটাই আসল পিস্তলের মতো।
মন্টু বলছেন, ‘অনুরোধ করার পরও চেঙ্গিস সাহেব কর্ণপাত করেননি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। সেখান থেকেও তাকে বলা হয়েছে সবকিছু বুঝিয়ে দিতে। তারপরও তিনি দেননি। বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার পল্টন থানায় জিডি করেছি।’
ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট এএইচএম আলী কবির চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘চেঙ্গিস সাহেবের কাছে নেই, এটা বললেই তো হবে না। ১৬ কোটি মানুষের ভেতর দায়িত্বে অন্য কেউ ছিল না। তিনিই ছিলেন। সুতরাং তার কাছেই সব আছে।’
‘পিস্তল চারটি নিয়ে আমরা চিন্তিত। অনেকটা আসল বন্দুকের মতো কাজ করে।’ বলেন আলী কবির।
পিস্তল নিয়ে ফেডারেশনের এমন ‘খেলা’ বিস্ময়কর। ইব্রাহীম চেঙ্গিসের দাবি, গত দশ বছর ধরে পিস্তলগুলো অকেজো। তিনি নিজের লাইসেন্স করা বন্দুক দিয়ে খেলা চালিয়ে এসেছেন!
ব্যক্তিগত বন্দুক দিয়ে খেলা চালানোর নিয়ম নেই। চেঙ্গিসকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেন, ‘এটা আমার জানা নেই। খেলা বন্ধ থাকলে তো আপনারাই বলবেন, খেলা হচ্ছে না। কিংবা খেলনা পিস্তল দিয়ে খেলা হয়।’
অ্যাথলেটরা বন্দুক নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাচ্ছেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অ্যাথলেট এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘পিস্তলগুলো কোথায় আছে আমরাও জানি না। আগের কমিটিকে এ বিষয়ে বারবার বললেও কোনও উত্তর পাইনি।’
কোচ কিতাব আলী সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে সরাসরি চেঙ্গিসকে দোষারোপ করেছেন, ‘চেঙ্গিস সাহেবের অসহযোগিতার কারণে শুধু পিস্তল নয়, ইলেক্ট্রনিক স্কোরবোর্ডের খবরও আমাদের জানা নেই!’