ফরহাদ মজহার অপহরণ হননি: আইজিপি
সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতেই কবি-প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার এ ঘটনা ঘটিয়েছেন এ কথা জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর পুলিশ সদরদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরো বলেন, ফরহাদ মজহার অপহরণের শিকার হননি— তিনি স্বেচ্ছায় ঢাকা ছেড়েছিলেন।
ফরহাদ মজহারকে অপহরণের বিষয়ে সরকারকে জড়িয়ে একটি মহলের বক্তব্যের কোনো ভিত্তি নেই—এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার ধারণা এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে এটাই ক্লিয়ার সরকারকে বিভ্রান্ত করতেই এমন ঘটনা।
সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার দিনের বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়।
ওই ফুটেজে ফরহাদ মজহারকে খুলনায় দেখা যায়।
আইজিপি বলেন, ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় ফরহাদ মজহার বিকেল ৪টা ৪১ মিনিটে খুলনা নিউ মার্কেটের ৫ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করেন। বিকেল ৫টা ১৭ মিনিটে ৩ নম্বর গেট দিয়ে বের হতে গিয়ে আবারও মার্কেটের ভিতর যান। পরে তিনি ব্যাগ খুলে কি যেন দেখতে থাকেন। ৬টা ২৩ মিনিটে ফরহাদ মজহার দোতলা যাওয়ার জন্য সিঁড়িতে উঠেন এরপর ৬টা ৪৪ মিনিটে তিনি নিউমার্কেট থেকে বের হন।
তিনি আরো বলেন, সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৭টা ২৭ মিনিট পর্যন্ত ফরহাদ মজহার নূর মার্কেটে অবস্থান করেন। ওই মার্কেট থেকে তিনি দুই দফায় মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকা পাঠান। ফরহাদ মজহার ঢাকা থেকে বাসে খুলনা গেছেন। কেননা মাইক্রোবাসে তিনি খুলনা গেলে পুলিশ চেকপোস্টে ধরা পড়তেন।
বাসায় সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, ফরহাদ মজহার ব্যাগ ছাড়া বের হন, তা হলে ব্যাগ এলো কিভাবে- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে জবাবে পুলিশ প্রধান বলেন, ব্যাগ পাঞ্জাবির ভিতরে নিয়ে যেতে পারেন।
আইজিপি বলেন, বাসা থেকে বের হওয়ার পর ১৮ ঘণ্টার মধ্যে ফরহাদ মজহার স্ত্রীকে ১০ বার ও এক নারীকে ছয় বার ফোন করেন যা পুলিশের কাছে রয়েছে।
গত ৩ জুলাই সোমবার ভোরে রাজধানীর নিজ বাসা থেকে বের হওয়ার পর তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে তার পরিবার আদারব থানায় জিডি করে।
দিনভর নানা জল্পনা-কল্পনার পর ৩ জুলাই-সোমবার রাতে যশোরের নোয়াপাড়ায় হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করা হয়। খুলনায় এক হোটেল মালিকের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে উদ্ধার করে র্যা ব। সেখান থেকে তাকে খুলনায় নিয়ে রাত দেড়টায় দিকে ঢাকার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরের আগে খুলনার ফুলতলায় সংবাদ সম্মেলন করে র্যা ব।
খুলনা থেকে ঢাকায় আনার পর মঙ্গলবার সকালে প্রথমে তাকে আদাবর থানায় নেয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ও স্বজনরা। রাজধানীর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ফরহাদ মজহারকে। আদালতের মাধ্যমে নিজ জিম্মায় বাসায় ফেরেন তিনি।