কাপাসিয়ায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৭ উদ্বোধন বর্ণাঢ্য র্যালী, পোনা মাছ অবমুক্ত ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
আসাদুল্লাহ মাসুম, কাপাসিয়া প্রতিনিধি:
‘‘ মাছ চাষে গড়বো দেশ, বদলে দেব বাংলাদেশ’’ এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ১৯ জুলাই বুধবার জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৭ উদ্বোধণ উপলক্ষ্যে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বর্ণাঢ্য র্যালী, পোনা মাছ অবমুক্ত ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে সফল মৎস্য চাষীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।
কাপাসিয়া উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাকছুদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৭ উদ্বোধণ করেন আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও মৎস্য সপ্তাহ উদ্যাপন কমিটির সদস্য সচিব শামীমা নাছরীন। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রধান,ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. রেজাউর রহমান লস্কর মিঠু, উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আনিসুর রহমান, কৃষি কর্মকর্তা আশিষ কুমার কর, উপজেলা প্রকৌশলী আহম্মেদ আব্দুল্লাহ,নির্বাচন অফিসার হুমায়ুন কবির, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ মাহবুব উদ্দিন আহম্মেদ সেলিম, মৎস্য চাষী শামীম আহমেদ প্রমূখ। । সফল মৎস্য চাষী হিসাবে মনো সেক্স তেলাপিয়া চাষে মোঃ মোস্তফা কামাল,পাঙ্গাশ মাছ চাষে মোঃ ওসমান গনি,কার্প-মিশ্র মাছ চাষে মোঃ মামুন মিয়াকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
প্রধান অতিথি সিমিন হোসেন রিমি এমপি বলেন, দেশে প্রচলিত মৎস্য আইন আছে, তা দিয়ে পোনা মাছ নিধন বন্ধ করা সম্ভব না। সবার আগে আমাদের সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করতে হবে। সমাজ সচেতন না হলে নিজ স্বার্থের জন্য অনেকেই বড় ধরনের ক্ষতি করছে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রনালয় এবং মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন বলে উল্লেখ করেন এবং তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ গ্রামের সাধারণ মানুষদের মাছ চাষ করার জন্য উৎসাহিত করতেন। তিনি আরো বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে নিজ বাড়ির আশপাশে বিল ঝিলে ও ডোবা নালায় মাছ চাষ করলে অন্তত পক্ষে ব্যক্তিগত চাহিদাটুকু মিটানো সম্ভব। আমাদের দেশের মিঠা পানির মাছ খুবই সুস্বাধু এবং এতে পুষ্টিগুনও বেশী। তাই আমাদের সবারই মিঠা পানির মাছ চাষে আগ্রহী হতে হবে। বর্তমানে মাছ উৎপাদনে বিশে^ বাংলাদেশ চতুর্থ অবস্থানে আছে। তাই এ সফলতাকে ধরে রাখতে হলে মাছ উৎপাদন বাড়াতে হবে। আর আমাদের কাপাসিয়ায় মাছের চাহিদার চেয়ে মাছ উদ্বৃত্ত আছে ১৫৫২.৫৮ মেঃ টন। ব্যবসায়িক দিক চিন্তা করে মাছের খামার করলে ব্যাপক ভাবে লাভবান হওয়া যায়। আমাদের কৃষি কাজে ব্যবহৃত কিটনাশক ওষুধ কমিয়ে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। ফলে বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। মাছের খামার গুলোতে স্বাভাবিক নিয়মে খাবার ব্যবহার করলে মাছের র্দুগন্ধ কমে আসবে। মৎস্য চাষ নিরাপদ ও লাভ জনক পেশায় পরিনত করতে হলে, মৎস্য অধিদপ্তরের চেষ্টার পাশাপাশি সমাজের সচেতন মহলকেও এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ স্বার্থক হবে।