মুন্সীগঞ্জে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গনের মুখে ৩০ টি গ্রাম হুমকির মুখে ২টি উপজেলা.
রুবেল মাদবর মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধ:
জেলার ২ টি উপজেলা লৌহজং ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলার নদী তীরবর্তী প্রায় ৩০ টি গ্রাম পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে।লৌহজং উপজেলার গাঁওদিয়া,কলমা,ডহুরী গ্রাম এবং টঙ্গিবাড়ী উপজেলার হাসাইল ইউনিয়নের বানারী, কান্দিপাড়া,সবচেয়ে বেশী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে বড়াইল, মাইজগাঁও, মিতারা, জৈনসার, বীরতারা, বাঘবাড়ী, সরিষাবনসহ প্রায় ৩০ টি গ্রামে প্রতিনিয়ন ভেঙ্গে বসতবাড়ী। স্থানীয়দের তথ্যমতে প্রতিদিন ৩০-৪০ টি বসতবাড়ী নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে । সরেজমিনে টঙ্গিবাড়ী পজেলার কামারখারা ইউনিয়নের বড়াইল গ্রামে গিয়েদেখা যায়, শত বছরের পুরানো বড়াইল জামে মসজিদটি ভোর রাতে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে করে মুসল্লিরা পাশেই অস্থায়ীভাবে নামাজ আদায় করতে দেখা গেছ। এর ঠিক পাশের বাড়ীটি জমিলা বেগমের তারকান্নায় আশে পাশের শত শত লোক ভিড় জমায়। কাছে গিয়ে জানাযায়,এই কান্না কোন স্বজন হারানো কান্না নয়। এই কান্না বাপ দাদার পৈত্রিকভিটা হারানো কান্না। জামিলা বেগমের স্বামীর বাড়ী গত বছর এই দিনে রাক্ষুসে পদ্মা কেড়ে নেয়। এবার নিজের বাপের বাড়ীতে ঘরবাড়ী নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু রাক্ষুষে পদ্মা গত রবিবার তার বসতবাড়ীর অর্ধেক অংশ ভেঙ্গে নিয়ে যায়। এখন তার বসতভিটা হুমকিতে রয়েছে । বসতবাড়ী অন্যত্র সরানো এবং ছেলে সন্তান নিয়ে কোথায় যাবে এ নিয়ে কান্নাকাটি করছেন। প্রতিবছর এসব নদী তীরবর্তী গ্রামের বাড়ীঘর পদ্মার ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। এখন পর্যন্ত প্রায় ২ শতাধিক লোকের বসতবাড়ী নদী গর্ভে চলে গেছে। যারা এখন ভাঙ্গণের তারা কোন মতে ঘরবাড়ী অন্যত্র সরিয়ে ফেলছেন। অনেকে জায়গার অভাবে ভরা বর্ষার কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিবে এই ভেবে পানির দামে ঘর, দরজা বিক্রি করে দিচ্ছেন।একই গ্রামের বাসিন্ধা মোঃরফিক মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, রাতে আমাদের ঘুম হয়না। আমার ৬০ লক্ষ টাকার বসত বাড়ী,পাড়া প্রতিবেশী ও আন্তীয় স্বজনদের মায়া ছেড়ে কোনমতে জান মাল নিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছি।৭০ বছরের বৃদ্ধ আছিয়া বেগম বলেন, আজকালের মধ্যে স্বামীর পৈত্রিক বসত ঘরটি ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে না নিলে এই ঘরটি আর রক্ষা করা যাবেনা। আর বসত ঘরটিও বিক্রি করতে পারছিনা। কেন পারছেন না জাবাবেতিনি বলেন, ১০ টাকার মাল ৫ টা বলে এ কারনে বিক্রিও করতে পারছিনা।এ বিষয়ে কামারখারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: মহিউদ্দিন হালদার জানান ,এলাকার অধিকাংশ নদী তীরবর্তী গ্রাম পদ্মায় ভেঙ্গে যাচ্ছে। ভাঙ্গনের শিকার ক্ষতিগ্রস্থদের তিনি ঘরবাড়ী নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের মাঠ, পো: অফিসের মাঠ এবং স্কুলের মাঠে আপাতত আশ্রয় নেওয়ার জন্য আহব্বান জানান। তিনি আরো জানান.সরকার যদি পদ্মায় কোন বেরিবাদ দিয়ে দেয় তাহলে নদী ভাংগা গ্রাম গুলো রক্ষা পাবে. পরবর্তীতি প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করে একটি স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দেন।