দিনারপুরে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটা অব্যাহত কোটি টাকার বানিজ্য
ছনি চৌধুরী,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ি পরগণা দিনারপুরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যখন পাহাড় কাটা ভূমিদস্যুদের হাত থেকে মরতে মরতে বেচেঁ উঠার নতুন করে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছিল ঠিক তখনই প্রকাশ্যে অবাধে হাইকোর্টের পাহাড় সংরক্ষণ করার নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে পাহাড় কাটায় মেতে উঠেছেন একদলভুক্ত অসাধু ব্যক্তি । প্রশাসনের চোখের সামনে এমন কর্মকান্ডে বিলিন হয়ে যাচ্ছে হবিগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ি অঞ্চল দিনারপুর পরগণার কয়েক শতাব্দীর ঐতিহ্য । দিনারপুরে পাহাড় কাটা এখন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে । অল্প কিছুদিন বন্ধ থাকার ফের প্রকাশ্যেই শুরু হয়েছে পাহাড় নিধন । কিছু অসাধু উধ্বতর্ন কর্মকর্তার ছত্রছায়াঁয় প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধিদের তত্ত্বাবধানে নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল হিসেবে খ্যাত দিনারপুর পরগণার পাহাড় কাটা অব্যাহত রয়েছে । কখনো গভীর রাতে আবার ভোরের সূর্য উদয় হওয়ার আগে আবার কখনো দুপুর কিংবা বিকাল বেলা সবার চোখের সামনে এমন কর্মকান্ড চলে আসছে । প্রভাবশালীদের ভয়ে পাহাড় কাটার প্রতিবাদ করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন একাধিক সচেতন নাগরিক। পাহাড় কাটায় প্রশাসনের নিরবতা ভাবিয়ে তুলছেন শান্তপ্রিয় হবিগঞ্জ জেলাবাসীকে । স্থানীয় লোকজন জানান, যেইসব ব্যক্তিরা নিজেদের জনপ্রতিনিধি দাবী করেন সেইসব ব্যক্তিরাই পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করার টাকাতে ভাগ বসান । এদিকে টাইলস তৈরি করার মাটি প্রতি ট্রাক ১০/১৫ হাজার টাকা করে বিক্রি করা হয় ঢাকা গাজীপুর ও সাজিবাজার সিরামিক্স টাইলস কোম্পানির এজেন্টদের কাছে । দিনারপুর পরগণার পাহাড় কেটে সমতল করা চক্রের সদস্যরা প্রতি ট্রাক মাটি বিক্রির টাকা থেকে প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের এব্যাপারে চুপ রাখার জন্য ২হাজার ৫শত টাকা দেন দিনারপুর পরগণার একজন ক্ষমতাসীন,প্রভাবশালী নেতাকে। এভাবেই কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কু-চক্রী মহল । সবদিক গায়েল করে প্রকাশ্যেই চলছে পাহাড় কাটা । আসলেই কী প্রশাসন এবং সাংবাদিকরা ভাগ নিচ্ছে এনিয়ে জনমনে সৃষ্ঠি হচ্ছে নানা প্রশ্ন এবং সমালোচনা ।
এঘটনায় স্থানীয় লোকজন পড়েছেন চরম বিপাকে । না পাড়ছেন কিছু বলতে না পাড়ছেন বিলিন হয়ে যাওয়া শতশত বছরের ঐতিহ্যের চিত্র সহ্য করতে । বরাবরের মতো এখানেও প্রশাসনের ভূমিকা নিরব । এনিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে চাপা ক্ষোভ প্রশ্ন তুলেছেন প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে । সর্বশেষ গত বছরের নভেম্বর মাসে গভীর রাতে অবৈধ ভাবে দিনারপুর পরগণার গজনাইপুর ইউনিয়নের শংকরসেনা গ্রামে টিলা কাটতে গিয়ে মাটি চাপায় ২জন শ্রমিকের মৃত্যু হয় । কান্দিগাঁও গ্রামের শেখ মাসুদ,পাহাড় কাটার স¤্রাট শামীম আহমেদসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে নিহত শ্রমিকের পরিবার । ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংযুক্ত নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল দিনারপুর পরগণার গজনাইপুর ইউনিয়নের ফুলতলী বাজার নিকটস্থ টিলা থেকে এবং পানিউমদা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়া থেকে গত কিছুদিন যাবত পাহাড় অঞ্চলকে সমতল করার উদ্দেশ্য একদল ভুক্ত অসাধু ব্যক্তি প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে বিলিন করে দিচ্ছে। পানিউমদা থেকে পাহাড় কাটার মাটি সুরমা ফিলিং স্টেশন এর নিকটে দুইভাগে বিভক্ত করে হয়েছে,কান্দিগাঁও সংযুক্ত গালিব নূর ফিলিং স্টেশন এর নিকটে রাখা হচ্ছে । এসব মাটি রাতের আধারে ট্রাকে করে বিক্রি করে দেয়া দেয়া হয় । সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় দিনের আলোতে গজনাইপুর ইউনিয়নের মহাসড়ক সংযুক্ত ফুলতলী বাজারের সাবেক ইউপি সদস্য তোয়াব উল্লাহ’র বাড়ির নিকট ুথেকে তার তত্ত্বাবধানে প্রকাশ্যে টিলা কেটে মাটি ট্রাকে করে বিক্রি করা সিরামিক্স কোম্পানির কাছে। সাংবাদিকদের সংবাদ বন্ধের জন্য টাকা দেওয়া হচ্ছে এমন খবরে নবীগঞ্জ সাংবাদিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে তোলপাড় । নবীগঞ্জ উপজেলা কমিশনার (ভূমি) জীতেন্দ্র কুমার নাথ জানান,পাহাড় কাটা বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে,প্রশাসন টাকা পাচ্ছে কী না এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা,বানুয়াট খুব দ্রুত ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে ।