চুনারুঘাটে গৃহবধূকে দারোগার পাশবিক নির্যাতন : ৬ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের
একে কাওসার, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় আসামিকে না পেয়ে আসামির স্ত্রী চার সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে নির্মমভাবে পিটিয়েছে চুনারুঘাট থানার বিতর্কিত দারোগা (এএসআই) দেলোয়ার হোসেন সহ একদল পুলিশ। তার বন্দুকের বাট ও সহযোগী সদস্যদের লাঠির আঘাতে ওই গৃহবধূর স্পর্শকাতর স্থানে ও দুই পায়ের উরু সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত জমাট হয়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হবিগঞ্জ জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে (৬ আগষ্ট) রবিবার
পুলিশের এই নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বাদী হয়ে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (বিশেষ) আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরণীতে উল্লেখিত আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন
(সংশোধিত) ২০০৩ আইনের ৯(৪)(খ)/৩০ দঃবিঃ ধারায় চুনারুঘাট থানার এএসআই দেলোয়ার হোসেন, এএসআই সাজিদ, এসআই আতিকুল আলম খন্দকার, এএসআই রিপন বড়ুয়া, এএসআই জোসেফ, কনস্টেবল সুমন মিয়া কে আসামি করে
একটি নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করেন। শাহেনার উপর পুলিশের পাশবিক নির্যাতন ও তার বসত ঘর ভাংচুর করাসহ নানা ধরনের হুমকির ঘটনায় পুরো জেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশরে বর্বর নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ কাজী শাহেনা(২৫) চুনারুঘাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড হাতুন্ডা গ্রামের (সাবেক কমিশনার) ইউনুছ আলীর স্ত্রী।
গত (১ আগষ্ট) মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হাতুন্ডা গ্রামে নির্যাতিতার স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আহত গৃহবধূ শাহেনা জানান, সন্ধ্যায় তিনি তার চার বছর বয়সী শিশু এক ছেলে ও তিন কন্যা সন্তানসহ ঘরে রাতের খাবার রান্নার কাজ করছিলেন।
এ সময় চুনারুঘাট থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন (৪০) ও এএসআই সাজিদ মিয়া (৩৮) সহ চারজন পুলিশ সদস্য বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে তার স্বামী কোথায় জানতে চান।
স্বামীর অনুপস্থিতির কথা জানাতেই এসআই দেলোয়ার শাহেনাকে অসত উদ্দেশ্যে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ইজ্জত বাচাতে শাহেনার সুর চিৎকারে নির্যাতনকারীরা পািলয়ে যাবার চেষ্টা করে। এসময় ঘরে থাকা সুকেচের গ্লাসের উপর পড়ে দারোগা দেলোয়ার আঘাত পান। এ ঘটনার সাথে সাথেই অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে এসে ওই ঘরে হামলা চালিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর ও পাশবিক নির্যাতন শুরু করে। পরে বন্দুকের বাঁট দিয়ে আঘাত করলে তার চিত্কারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর ও ভয় প্রদর্শন করে পুলিশ।
এদিকে এ মামলার আইনজীবী মোঃ নুরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, উল্লেখিত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে আদালত পুলিশ সুপার কে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন।