উপগ্রহের ছবিতে রাখাইন রাজ্যে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়ার প্রমাণ মিলেছে
উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবিতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানে ১০০ কিলোমিটার জুড়ে ১০টি এলাকায় বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
এদিকে, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ। রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে বহু মানুষ হতাহত হওয়ার ঘটনায় এরমধ্যেই গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এছাড়া সেপ্টেম্বরে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বসংস্থাটির সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে মিয়ানমারের পরিস্থিতি আলোচ্যসূচিতে রাখার উদ্যোগ নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মিয়ানমারের রাখাইনে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর ওই এলাকার বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা শত শত রোহিঙ্গাকে হত্যা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবিতে রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে কমপক্ষে ১০টি এলাকায় ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার চিহ্ন মিলেছে। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর ২৫ আগস্ট দুপুরে জে দি পেইন ও কোয়ে তান কুক এলাকায় এবং ২৮ আগস্ট মংডু শহর ও বিভিন্ন গ্রামে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।
এইআরডব্লিউ বলছে, সহিংসতায় একশো জনেরও বেশি রোহিঙ্গার প্রাণহানী হয়েছে।
মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তদন্তে দেশটির সরকারকে চাপ দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন সংগঠনটি।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, দমন-পীড়নের মুখে পালাতে থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৫ হাজারের বেশি তিন দিনেই বাংলাদেশে ঢুকেছে। রোহিঙ্গাদের প্রবেশের সুযোগ দিতে বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি, তাদের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারকে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকার করেছে।
এদিকে, রাখাইনে চলমান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
বিশ্ব সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, মহাসচিব ওই হামলার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সহিংসতার মূল অনুসন্ধান এবং সেখানকার নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সহায়তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সরকারকে আবারো আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অফ স্টট এলিস ওয়েলসের সঙ্গে মঙ্গলবার সকালে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী।
এসময় এলিস চলমান রোহিঙ্গা পরিস্থিতিকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেন।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে রাখাইনের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন এবং বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানান।