শৈলকুপা সরকারি ডিগ্রি কলেজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ
ঝিনাইদহ সংবাদদাতাঃ
ঝিনাইদহের শৈলকুপা সরকারি ডিগ্রি কলেজে জেঁকে বসেছে নানা অসঙ্গতি অনিয়ম আর অর্থলোপাটের কৌশলী কারিশমা। অভিযোগ উঠেছে মাসের পর মাস লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আব্দুস সোবহান। চলতি অর্থ বছরে লুটপাটের তথ্যপ্রমাণ ফাঁস হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ করেছে। তবে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আব্দুস সোবহান অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তার বিরুদ্ধে একটি চক্র অপপ্রচার চালাচ্ছে, তবে ভূয়া বিল ভাউচার জমা দিয়ে প্রায় ৭,৭০,০০০ টাকা তুলে আত্মসাতের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। অভিযোগ সূত্রে ও তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে ১১,৬১,০০০ টাকা বরাদ্দ হয়। এর মধ্যে পৌরকর-১ লাখ, ভূমিকর-১০ হাজার, পানি বিল-৩০ হাজার, টেলিফোন বিল-৩০, বিদ্যুৎবিল-৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়া বইপত্র-৫০ হাজার, খেলার সামগ্রি-৫০ হাজার, রাসায়নিক দ্রব্যাদি ৭০ হাজার, ব্যবহারিক দ্রব্যাদি ১ লাখ, কম্পিউটার সামগ্রি-২০ হাজার, লিভারিজ-২০ হাজার, কম্পিউটার ও অফিস-৩০ হাজার, শিক্ষা উপকরণ ৪০ হাজার, ল্যাব যন্ত্রপাতি ৩ লাখ টাকার পুরোটায় অধ্যক্ষ আত্মসাত করেছেন, তবে অন্যান্য ব্যয়-৮০ হাজার টাকার আংশিক খরচ করেছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রভাষক জানিয়েছেন। প্রায় ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ফাঁস হওয়ার সাথে সাথে ফুঁসে উঠেছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীগণ।
বিল ভাউচার জমা দিয়ে সমস্ত টাকা তোলা হলেও দৃশ্যমান কোন পন্যই ক্রয় করা হয়নি, এ কারনে নিরানব্বই ভাগ ভূয়া এ ভাউচারে ক্রয়কৃত জিনিসপত্রের সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করেছে শিক্ষার্থী অভিভাবকবৃন্দ। ২৪-০৯-২০১৬ তারিখে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আব্দুস সোবহান শৈলকুপা সরকারি ডিগ্রি কলেজে যোগদানের পর থেকেই নিয়মনীতি থোরায় কেয়ার করে যথাচ্ছা কলেজ চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষার জন্য ৩’শ টাকা, অতিরিক্ত ভর্তি ফিস নেওয়ার অভিযোগ আছে। কলেজটি দির্ঘদিন সরকারি হলেও পর্যাপ্ত সাবজেক্ট ও শিক্ষক নাই, আবাসন ব্যবস্থা নাই, কম্পিউটার ল্যাব নাই এবং সর্বপরি শিক্ষার মান ভাল না হওয়াসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত ও প্রচারবিমুখ সরকারি ডিগ্রি কলেজ যেন প্রাণহীন দেহের মত অসার পড়ে আছে। জেঁকে বসা অনিয়ম আর দূর্নীতির যাদুঘরখ্যাত শৈলকুপা ডিগ্রি কলেজে এ বছর পাশের হার মাত্র ৪৪ শতাংশ। চলতি বছর এ+ পেয়েছে মাত্র ৪ জন, মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৩’শ ৮৮ জন, পাশ করেছে, ১’শ ৭৩ জন। এ ব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আব্দুস সোবহান বলেন, একটি চক্র তাকে ফাঁসানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা কম হওয়ায় হোস্টেলের চাহিদাপত্রে ‘বর্তমান অবস্থায় প্রয়োজন নাই’ উলে¬খ করলেও শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তা পুন:রায় সংশোধনী পাঠানো হয়েছে। তবে প্রায় ৭ লাখ টাকার দৃশ্যমান কোন মালামাল ক্রয় না করেই যে ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে এ বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।