টাম্পাকো ট্রাজেডির এক বছর পূর্ণ হল আজ
মো.রবিউল ইসলাম,টঙ্গী
টাম্পাকো ফয়লস্ লিমিটেড কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকারে এক বছর পূর্ণ হল আজ । গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বও ভোরের আলো ফোটার আগেই নিভে যায় ৪৩ শ্রমিকের তাজা প্রাণ। সেদিন কারখানার গ্যাস লাইন লিকেজ থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর অগ্নিকুলিতে পরিণত হয় টাম্পাকো।। আগুনে পুড়ে ও ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে নিহত হন ৪২ জন। আহত হন প্রায় ৭৫ জন। কারখানার পাঁচ তলা ভবনসহ অধিকাংশ অবকাঠামো ভেঙ্গে ধুমরে মুচরে জায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের।কারখানা কর্তৃপক্ষ ও সরকারের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হলেও শ্রমিক পরিবারগুলোর যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার মত নয়। আহতদের মধ্যে অনেকে আজীবনের জন্য পঙ্গুগুত্ব বরণ করেন।
এই দুর্ঘটনায় মালিকপক্ষকে দায়ী করে নিহত শ্রমিক জুয়েলের বাবা আব্দুল কাদের গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর ও পুলিশের পক্ষ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পৃথক দুটি মামলা করা হয়। এছাড়া গাজীপুর জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, শ্রম মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (জামাক) তদন্ত কমিটি গঠন করে। ধ্বংসপ্রাপ্ত কারখানার তিন কোটি টাকার মালামাল চুরির অভিযোগে কারখানার পক্ষ থেকে আরো একটি মামলা করা হয়। এসব মামলা ও তদন্ত কমিটির এখনো কোনো সুফল দেখাতে পারেনি।
এদিকে লাশের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ার অজুহাতে নিহতদের মধ্যে পাঁচ শ্রমিকের পরিবারগুলোকে ঘোষিত ক্ষতিপূরণের টাকা এখনো দেয়া হয়নি। গত এক বছর ধরে ডিএনএ টেস্টের অপেক্ষায় পাঁচটি লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পড়ে রয়েছে।
তারা হলেন- নাজিম উদ্দিন, মাসুদ আহমেদ, জহিরুল ইসলাম, আনিসুর রহমান ও জয়নুল ইসলাম। এছাড়াও দুর্ঘটনার পাঁচ মাস পর গত ফেব্রুয়ারিতে ডিএনএ টেস্টে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর রফিকুল ইসলাম, রিয়াজ হোসেন মুরাদ, রেদওয়ান আহমেদ ও আল-মামুনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তন্তর করা হয়। পরে শনাক্ত হওয়া চার শ্রমিকের স্বজনদের কাছে গাজীপুর-২ আসনের সাংসদ মো. জাহিদ আহসান রাসেলের উপস্থিতিতে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হয়। খোঁজকরে দেখা জায় নিহত পরিবারের অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন
উলেখ্য, টঙ্গী বিসিক শিল্প এলাকায় সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ড. সৈয়দ মকবুল হোসেনের মালিকানাধীন টাম্পাকো ফয়েলস কারখানায় গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর সকালে বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। এতে প্রতিষ্ঠানটির চারটি ভবনের তিনটি ধসে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় ৪২ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ৭৫ জন। নিখোঁজ ছিলেন মোট নয়জন। পরে ডিএনএ টেস্টে চারজনের পরিচয় শনাক্ত হলে নিখোঁজের তালিকায় থাকেন আরো পাঁচজন।