বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে রহস্যজনক চুরি \ ৬টি এলইডি টিভি উদ্ধার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে একটি মহলের দৌড়ঝাঁপ
এশিয়ার বৃহত্তম বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডের নিশ্চিত্র নিরাপত্তা ও চারিদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রহস্যজনক ভাবে উচ্চ দামের ৭টি এলইডি টিভি চুরির ঘটনায় সর্বত্র তোলপাড় হচ্ছে। একটি মহল টিভি চুরির ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। চুরিকৃত ৬টি টিভি উদ্ধার হলেও চোরকে পুলিশে সোর্পদ না করে স্থানীয় চেয়ারম্যানের জিম্মায় রাখা হয়েছে। কিন্তু ঐ চেয়ারম্যান রহস্যজনক কারনে সাংবাদিকদের কাছে ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন। এনিয়ে সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন ধানা বাঁধছে।জাতীয় সম্পদ বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের চুৃরি নিয়ে কেন এতো লুকোচুরি সে প্রশ্ন এখন সবার মাঝে। শেভরণ বিষয়টি তাদের নিজস্ব গতিতে ধারা তদন্ত করছে। শেভরণ ও স্থানীয় মেম্বার এবং সালিশ আওয়ামীলীগ নেতা চুরির ঘটনাটি স্বীকার করলে চেয়ারম্যান অস্বীকার করছেন কেন এ প্রশ্ন সবার কাছে তীব্র আলোচনা হচ্ছে।পাল্টাপাল্টি বক্তব্য নিয়ে সচেতন মহলে নানা রহস্য ও ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, গত কয়েকদিন পূর্বে বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের সাউথ প্যাড করিমপুর অফিসে দুঃসাহসিক চুরি সংঘটিত হয়। উক্ত চুরির ঘটনায় ৭টি ৩২ ইঞ্চি এলইডি টিভি চুরি হয়। টিভি চুরির পরপরই বিবিয়ানার দায়িত্বে নিয়োজিত শেভরন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্থানীয় ইনাতগঞ্জ ইউপি চেয়াম্যান বজলুর রশিদ ইউপি সদস্য সেজুল মিয়া ও ইনাতগঞ্জের ইউপি আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মালিক সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি অবগত করেন। এর প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান ও মেম্বার পার্শ্ববর্তী করিমপুর গ্রামের আব্দুল আহাদের পুত্র আবুল কালামকে সন্দেহভাজন হিসেবে ধরে এনে ইউপি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আবুল কালাম জিজ্ঞাসাবাদে টিভি চুরির ঘটনা স্বীকার করেন। সে জানায়, চুরির সময় তার সাথে জড়িত ছিলো একই গ্রামের নেছার উল্লার পুত্র আলী হোসেন ও পিরন নাথের ছেলে বিপুল নাথ । কালামের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ৬টি টিভি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত টিভি গুলো যাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছিলেন তারা হলেন, শেভরন নিরাপত্তা বিভাগ গার্ড আব্দুল আজিজের কাছে একটি শেভরন গাড়ী চালক এমরানের কাছে ১টি, শেভরনের ওয়েন এন্টার প্রাইজের লিটনের কাছে ১টি, মোস্তাপুর গ্রামের ফিরোজ মিয়ার কাছে ১টি, কসবা গ্রামের মিছবা উদ্দিনের কাছে ১টিভি পাওয়া যায়। এ ছাড়াও আটককৃত কালামের কাছে থেকে ১টি টিভি উদ্ধার করা হয়। এবং কালাম সে জানায়, তার সাথে থাকা বিপুল নাথের কাছে আরেকটি টিভি রয়েছে। এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য সেজুল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমরা ৬টি টিভি উদ্ধার করেছি। টিভি এবং আটককৃত আবুল কালাম এখন চেয়ারম্যানের জিম্মায় রয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে একই গ্রামের বিপুল নাথ এবং আলী হোসেন নামে দুই ব্যক্তি। তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে তাই বিষয়টি এখন ঝুলে রয়েছে। উক্ত চুরির বিষয়টি চেয়ারম্যান সাহেবের জিম্মায় থাকায় থানায় কোন মামলা হয়নি। এব্যপারে সালিশে উপস্থিত ইনাতগঞ্জ ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মালিক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শেভরন আমাদের বিষয়টি জানানোর পর, ্আমরা স্থানীয় ভাবে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করেছি। টিভি ও আটককৃত আবুল কালাম চেয়ারম্যানের জিম্মায় রয়েছে। করিমপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার ছাবু মিয়া বলেন, ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় হলেও কেন মামলা হয়নি তা আমি জানিনা। দেশের বৃহত্তম গ্যাস ফিল্ডের চুরির বিষয় ধাপাচামা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে কেন? আমার শুনেছি ১৩টি এলইডি টিভি চুরি হয়েছে। এর সঠিক তদন্ত এবং বিচার চাই। এব্যাপারে করিমপুর গ্রামের পারুল মিয়া জানান, গ্যাস ফিল্ডে চুরি হয়েছে এটা সঠিক, তবে চোর কালামের সাথে কে কে জড়িত তা জানিনা। এব্যাপারে শেভরনের মিডিয়া অফিসার বদরুদ্দোজা বদর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত চলছে। শেভরনের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শেভরনের উর্ধ্বতণ কতৃপক্ষ বিষয়টি অবগত রয়েছে। এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে সালিশে বা স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেছি। অভিযুক্ত সবাই না থাকায় বিষয়টি শেষ করতে পারিনি। আমার জিম্মায় চোর বা টিভি কিছুই নেই। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের জিপিএস এর নির্দেশে তদন্ত হচ্ছে তাই এব্যপারে কোন মন্তব্য করবো না। কেন মামলা হয়নি আমি জানিনা। তবে তিনি চুরির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।