ঝিনাইদহে সড়ক বিভাগের এসও মনিরুল যখন নিজেই ঠিকাদার!
ঝিনাইদহ সংবাদদাতাঃ
ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের সদ্য বিদায়ী উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে রাস্তার কাজ না করেই সড়কের টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। মেরামত করা রাস্তা অল্প দিনে নষ্ট হয়ে গেলে সড়ক বিভাগ থেকে পুননির্মানের চিঠি দেওয়ার পর বিষয়টি ফাঁস হয়ে পেড়েছে। অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের খড়িখালী দোকানঘর স্থানে আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে রাস্তা রক্ষনাবেক্ষন প্রকল্পের আওতায় কাজ করা হয়। উক্ত কাজ কুষ্টিার ঠিকারদার লাল মিয়া পান। কিন্তু তিনি করেন নি। ঝিনাইদহ সড়কের বিদায়ী নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান, এসডি আমজাদ হোসেন ও এসও মনিরুল নিজেরাই ঠিকাদার সেজে কাজ করার পর অল্প দিনে নষ্ট হয়ে যায়। এক বছরের মধ্যে রাস্তা নষ্ট হলে ঠিকাদারকে কাজটি করে দিতে হয়।
না করলে ঠিকাদারের জমানত থেকে কেটে রাখার বিধান রয়েছে। গত ঈদের আগের নির্মিত রাস্তা নষ্ট হয়ে গেলে ঠিকাদার লাল মিয়াকে রাস্তা করে দিতে চিঠি ইস্যু করেন। কিন্তু লাল মিয়াসহ কোন ঠিকাদারই রাস্তা মেরামতে সাড়া দেন নি। ফলে সওজ বিভাগের কেনা মালামাল দিয়ে পিঠ বাঁচানোর জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান, এসডি আমজাদ হোসেন ও এসও মনিরুল ত্রæটিপুর্ন রাস্তা যেনতেন ভাবে মেরামত করেন বলে অভিযোগ। নাম প্রকাশ্যে একজন ঠিকাদার অভিযোগ করেন নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান, এসডি আমজাদ হোসেন ও এসও মনিরুল তার কাছ থেকে কাজ কিনে নিয়ে নিজেরাই করেছেন। ওই নষ্ট হওয়া রাস্তা আমি কেন মেরামত করবো ?
অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ সওজের আওতায় কালীগঞ্জের নিমতলা থেকে ডাকবাংলা ত্রীমোহনী, ঝিনাইদহ কুষ্টিয়া সড়কে দুধসর নায়েব জোয়ারের তেল পাম্প এলাকা, চুয়াডাঙ্গা মুজিবনগর সড়ক, শেলকুপার লাঙ্গলবাধ, গাড়াগঞ্জ কুষ্টিয়া ঝিনাইদহ চড়িয়ার বিল শেখপাড়া সড়ক, পিএমপি প্রকল্পের আওতায় কালীগঞ্জ খয়েরতলা বাকুলিয়া সড়ক, আমতলা থেকে তৈলটুপি রাস্তা ও খড়িখালী দোকানঘর সড়ক উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে এসও মনিরুল ইসলাম। এর মধ্যে কালীগঞ্জের নিমতলা থেকে ডাকবাংলা ত্রীমোহনী সড়কে ৫০ লাখ টাকার মাটির কাজ না করেই এসও মনিরুল ও আহসান তুলে নেন বলে কথিত আছে। ঝিনাইদহ চুয়াডাঙ্গা মুজিবনগর সড়কে প্রতি কিলোমিটারে ৫০ লাখ টাকার মাটির কাজ ছিল। ওই সড়কের দুধারে মাটি দেওয়ার কথা ছিল। সেখানেও ঘাপলাবাজী করেছে এসও মনিরুল।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে ২০১৩ সালের মে মাসে রাঙ্গামাটি জেলায় প্রথম চাকরীতে জয়েন করেন এসও মনিরুল। তখন তার বেতন ছিল ১৬ হাজার টাকা। কিন্তু মাত্র ৪ বছরে তিনি ফুলে ফেঁপে উঠেছেন। চড়ে বেড়ান দামী কালো রংয়ের এলিয়েন প্রাইভেট। নামে বেনামে অঘাত টাকা জমিয়েছেন তিনি। ঢাকায় কিনেছেন ফ্লাট। চার বছরে তার লাইফ স্টাইল বদলে গেছে। আর এ সব করেছেন তিনি ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগে এসে। বর্তমান তিনি নিজ জেলা কুষ্টিয়ায় পোষ্টিং নিয়ে চলে গেছেন। এতো অপকর্ম করেও তার বিরুদ্ধে বিভাগীও কোন মামলা হয়নি। নেই তদন্তের উদ্যোগ। তার সম্পদের খোঁজ নিলেই মাত্র চার বছরে ফুলে ফেঁপে ওঠার তথ্য ফাঁস হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। এ ব্যাপারে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মনিরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সঠিক নয়। আমি কোন ঠিকাদারী কাজের সাথে যুক্ত নয়। অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।