তাহিরপুর সীমান্তে চুনাপাথর পাচাঁরের সময় বিএসএফের গুলিতে ৩ চোরাচালানী আহত:২টি নৌকা আটক
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্র নগর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে চুনাপাথর পাচাঁরের সময় ভারতীয় বিএসএফের গুলিতে ৩চোরাচালানী গুলিবৃদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এঘটনার প্রেক্ষিতে ২টি ইঞ্জিনের নৌকা আটক করা হয়েছে। বিএসএফের গুলিতে আহতরা হলেন-উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের লামাকাটা গ্রামের এরশাদ মিয়ার ছেলে রুকন মিয়া (৩৩),একই গ্রামের আলকাছ মিয়ার ছেলে আসাদনুর (২৫) ও পার্শ্ববর্তী মন্দিআয়া গ্রামের আশরাফুল (৩৫)। তাদেরকে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সীমান্ত এলাকাবাসী জানায়,প্রতিদিনের মতো আজ ১৫.০৯.১৭ইং শুক্রবার ভোররাতে চোরাচালানী মস্তোফা মিয়া হরফে মস্তো মিয়া,তার সহযোগী লিটন মিয়া ও জঙ্গলবাড়ি গ্রামের চিহ্নিত চোরাচালানী,হুন্ডি পাচাঁর মামলার জেলখাটা আসামী আইনাল মিয়া বীরেন্দ্রনগর বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার সাঈদ এর নির্দেশে হাবিলদার মশিউর ও সিপাহী আফসারকে সাথে নিয়ে বাগলী এলসি পয়েন্ট দিয়ে ৯টি ইঞ্জিনের নৌকা দিয়ে ৯০টন ও সুন্দরবন এলাকা দিয়ে ২৫টি ইঞ্জিনের নৌকা দিয়ে ২৫০টন চুনাপাথর পাচাঁর করার পর লামাকাটার রন্দুছড়া দিয়ে চুনাপাথর পাচাঁর করতে যাওয়ার পর বিএসএফ এসে ২টি ইঞ্জিনের নৌকা আটক করে। এসময় চোরাচালানীরা বিএসএফকে তাড়া করলে বিএসএফ ২ বাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে। এসময় ৩ চোরাচালানী গুলিবৃদ্ধ হয়। এঘটনার পর সকাল ৮টায় বিএসএফের হাতে আটককৃত ২টি ইঞ্জিনের নৌকা ফেরত এনে বীরেন্দ্র নগর ক্যাম্পের নিয়ে যায় বিজিবি। এরআগে গতকাল ১৪.০৯.১৭ইং বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় চোরাচালানী মস্তো মিয়া ও লিটন মিয়া সুন্দরবন এলাকা দিয়ে ভারত থেকে চুনাপাথর পাচাঁর করার সময় বিএসএফ ও চোরাচালানীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় বিএসএফ ১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষন করে। এঘটনার খবর পেয়ে বীরেন্দ্র নগর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার সাঈদ,হাবিলদার মশিউর,সিপাহী আফসার অন্যান্য বিজিবি সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুন্দরবন এলাকার জিরো পয়েন্ট এলাকায় মজুদ করে রাখা প্রায় ৪০০টন চুনাপাথর চোরাচালানী মস্তো মিয়াকে তাড়াতাড়ি সড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। এরপর রাত ১২টা থেকে বাগলী,সুন্দরবন ও লামাকাটা এলাকা দিয়ে ইঞ্জিনের নৌকা দিয়ে চুনাপাথর পাঁচার শুরু হয়। এবং পাচাঁরকৃত প্রতিটন চুনাপাথর থেকে বীরেন্দ্র নগর বিজিবি ক্যাম্পের নামে ২০০টাকা,কোম্পানী কমান্ডারের নামে ১০০টাকা,২সাংবাদিকদের নামে ১০০টাকা,থানার নামে ১৫০টাকা,সিও,র সোর্স পরিচয় দিয়ে বীরেন্দ্রনগর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে হযরত আলী ও একই গ্রামের মৃত জামাল মিয়ার ছেলে মঞ্জুল মিয়া নিচ্ছে ১০০টাকা,কাস্টমসের নামে ১০০টাকাসহ মোট ১হাজার টাকা চাঁদা নিচ্ছে চোরাচালানী ও বিজিবি ক্যাম্পের সোর্স পরিচয়ধারী চোরাচালানী মস্তো মিয়া। অন্যদিকে চোরাচালানী আইনাল মিয়া চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প ও থানা-পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে ১নৌকা বোঝাই চুনাপাথর থেকে থানা-পুলিশ,বিজিবি ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে ৩হাজার টাকা চাঁদা নিচ্ছে জঙ্গলবাড়ি গ্রামের রাস্তার মোড়ে অবস্থিত তার অফিসে বসে।
এব্যাপারে বীরেন্দ্র নগর বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার সাঈদ বলেন,সীমান্ত এলাকায় কত কিছুই ঘটতে পারে,তবে চোরাচালানের বিষয়ে কথা বলতে আমার উপর মহলের নিষেধ আছে,আপনারা সিও স্যারের সাথে কথা বলেন।
সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক নাসির উদ্দিন বলেন,আটককৃত নৌকাগুলো বিএসএফের কাছ থেকে ফেরত এনেছি,তবে বিএসএফ গুলি নয় ফটকা ফাটিয়ে ছিল,এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।