রোহিঙ্গা সংকট: জাতিসংঘকে ‘বলিষ্ঠ ও দ্রুত’ পদক্ষেপের আহ্বান ট্রাম্পের
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকটের অবসানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে ‘বলিষ্ঠ ও দ্রুত’ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বুধবার প্রেসিডেন্টের এই আহ্বানের কথা জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বক্তব্যে পেন্সমিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ভয়াবহ নৃশংসতা, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া এবং রোহিঙ্গাদের তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ করেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতি অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য কূটনৈতিক উদ্যোগকে সহযোগিতা করতে আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট।
এই সংকটের অবসান এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর এই প্রয়োজনের সময় তাদের সহায়তা ও তাদের মাঝে আশা জাগাতে বলিষ্ঠ ও ত্বরিত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও আমি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত ২৪ আগস্ট রাতে কয়েকটি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে হামলার পর দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে নতুন করে দমন অভিযানে নামে।
সেনাবাহিনীর চলমান অভিযানে গত প্রায় এক মাসে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
তারা বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মানুষ মারছে। রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ এবং গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে।
নিউ ইয়র্কে সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে উচ্চ পর্যায়ের এক সভার ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ইয়াসিন কবির জয়
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই দমন অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূলের’ চেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এর আগেও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুরতার নিন্দা জানানো হলেও মাইক পেন্সের এই বক্তব্যই সবচেয়ে কঠোর বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়।
রাখাইনে এ সহিংসতা এবং হাজার হাজার শিশুসহ লাখ লাখ রোহিঙ্গার দেশান্তরী হওয়াকে একটি ‘বড় ট্রাজেডি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন পেন্স।
সহিংসতা বন্ধ না হলে এটা ঘৃণা ও বিশৃঙ্খলার বীজ বপন করবে যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ওই অঞ্চলকে গ্রাস করতে পারে এবং আমাদের সবার জন্যই হুমকি হয়ে উঠতে পারে, বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
মাইক পেন্স বলেন, সহিংসতা এবং এতে ক্ষতিগ্রস্তদের চিত্র আমেরিকার জনগণকে এবং পুরো বিশ্বের বিবেকবান মানুষকে মর্মাহত করেছে।
সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় তিন কোটি ১৫ লাখ ডলার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে এই সহায়তার ঘোষণা আসার পর ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট সাংবাদিকদের বলেন, পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য দুই কোটি ৮০ লাখ ডলার দেবে তার দেশ।
এর বাইরে ৩৫ লাখ ডলার পাঠানো হবে মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের সহায়তার জন্যে।