আশুলিয়ায় জমি বিক্রিসহ বরাদ্ধের টাকা আতœসাতের অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
আশুলিয়ার ইয়ারপুর হাই স্কুল উন্নয়নের কথা বলে স্কুলের জমি বিক্রিসহ বরাদ্ধের টাকা আতœসাতের অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শুধু স্কুলের জমি আর বরাদ্ধকৃত টাকাই নয় স্কুলের উন্নয়নের কথা বলে সরকারী বিলের লিজ দিয়ে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য, শিক্ষক, স্থানীয়রা এ অভিযোগ করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত চার মাস আগে স্কুলের খেলার মাঠে বালু ভড়াটের জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে দুই লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। এর চার মাস পার হয়ে গেলেও চার ট্রাক বালু ফেলিয়ে প্রধান শিক্ষক পুরো দুই লাখ টাকা আতœসাৎ করে নিয়েছে। এখানেই খ্যান্ত হননি তিনি, স্কুল সংস্কারের জন্য উপজেলা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া পাঁচ বান টিনও টাকার বিনিময়ে সভাপতি জমত আলীকে দিয়ে দিয়েছে।
এছাড়াও স্কুলের বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০ শতাংশ জমি ম্যানেজমেন্ট কমিটির সহয়াতায় বিক্রি করে দিয়েছেন। বিদ্যালয়ের সামনে সরকারী একটি গজারীর বিল রয়েছে। ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই বিলটি প্রতিবছর স্কুলের পক্ষ থেকে লিজ দেওয়া হয়। আর এ বিল থেকে বছরে ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা আয় হয়। অথচ স্কুলের উন্নয়নের খাতে এসব টাকা ব্যবহার না করে গত কয়েকবছর যাবৎ প্রধান শিক্ষক পুরো টাকা আতœসাৎ করেছে অভিযোগ করেন ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যরা। এমনকি ম্যানেজমেন্ট কমিটির বৈঠকে একাধিকবার এসব টাকার হিসাব চাওয়ায় হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, হাই স্কুলে কম্পিউটার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সময় তার কাছ থেকে স্কুলের উন্নয়নের ফান্ডে জমা করার কথা বলে তার কাছ থেকে অন্যায়ভাবে দুই লাখ টাকা আদায় করেন প্রধান শিক্ষক। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে স্কুলের জন্য দেওয়া টাকা ফান্ডে জমা না রেখে প্রধান শিক্ষক এসব টাকা আতœসাৎ করেন। স্কুলের আয় ও ব্যয়ের সঠিক হিসাবের জন্য প্রতিবছর একটি অডিট কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে তিনিও একজন সদস্য হিসেবে ছিলেন। এ বছর বিভিন্ন উৎস থেকে স্কুলের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা ও ব্যায়ের হিসাবের সাথে গড়মিল খুঁজে পায় এ কমিটি। পরে তিনি এর সঠিক হিসাব চেয়েও প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির কাছ থেকে কোন উত্তর পাননি।
তবে এ বিষয়ে ইয়ারপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার কোন কথা বলতে রাজী হয়নি। তিনি ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতির সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। এ ব্যাপারে ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি জম্মত আলী বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ তারা খতিয়ে দেখছেন।
এব্যাপারে সাভার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একরামুল হক বলেন, স্কুলের মাঠে বালু ভড়াটের জন্য তিনি দুই লাখ টাকা বরাদ্ধ দিয়েছেন। তবে মাটি ভড়াট না করা হলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।
এব্যাপারে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে তারা একটি অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।