সানিয়া আত্মহত্যায় পুনঃ তদন্তের লাশ উত্তোলন; আসামীরা পাঁচ দিনের রিমান্ডে
পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ স্কুলশিক্ষার্থী সোনিয়া আত্মহত্যার সাতদিন পর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে কবর হতে উত্তোলন করা হয়েছে লাশ। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহরাব হোসেন এর নেতৃত্বে কালারামজোত কবরস্থান থেকে শতশত সাধারন মানুষের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করা হয়। সোনিয়ার আত্মহত্যার পর থানায় তাৎক্ষণিক ইউডি মামলা করে লাশ ময়নাতদন্ত করা হলেও ১৪ অক্টোবর ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ এর ৯ (ক) ধারায় মামলার পর আসামীদের আত্মসমর্পণের পর আদালত তা পুনঃ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সরেস চন্দ্র, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া, সদর ইউপিচেয়ারম্যান কাজী আনিসুর রহমান, সাংবাদিক এম এ বাসেত, জাবেদুর রহমান, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আতিকুজ্জামান শাকিল।
এদিকে দুুপুুরে ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেইলের শিকার রহিমা আক্তার সোনিয়ার ধর্ষণ ও আত্মহত্যা পরোচনা মামলার দুুই আসামী মনসুর আলম রাজন ও আতিকুজ্জামান আতিককে পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত। ১৬ অক্টোবর সোমবার দুই আসামী আদালতে আত্মসমর্পণ করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলি আদালত-৪ জামিনের আবেদন করে। কিন্তু বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম তাদের জামিন নাকচ করে জেল হাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন। সোনিয়ার ধর্ষন ও আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় অভিযুক্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওটি অ্যাটেনডেন্ট রাজন। তাঁর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কীনা এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রেজাউল বারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে কোন অভিযোগের কাগজপত্র পাইনি। পেলে প্রতিষ্ঠানের বিধি মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার দুই ধর্ষকের হাতে সম্ভ্রম হারানোর লজ্জায় ও ব্ল্যাকমেইলের হুমকি সইতে না পেরে কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের নবম শ্রেণির এই মেধাবী শিক্ষার্থী ও পাথর শ্রমিকের কন্যা সোনিয়া আত্মহত্যা করে। পরিবারের অভিযোগ, তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ওয়ার্ড বয় মনসুর আলম রাজন ও তেঁতুলিয়া বাজারের বিকাশ এজেন্ট আতিকুজ্জামান আতিক নামের দুই যুবক তিনমাস ধরে ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারন করে ইন্টানেট সহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারসহ প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তিন মাস ধরে নানাভাবে ধর্ষণ করে আসছিলেন। ধর্ষণের ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখালে কোচিং না গিয়ে অর্ধেক রাস্তা থেকে বাসায় ফিরে এসে ফাঁসি লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
এ ঘটনায় নিহতের পরিবার ধর্র্ষণ ও আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা মডেল থানা ঘটনার চারদিন পর বিলম্বে নিলে ফুসে উঠে সংবাদমাধ্যম ও উপজেলার নানা পেশাজীবি মানুষ। পরে গত ১৩ ও ১৪ অক্টোবর দেশের শীর্ষ গণমাধ্যমে সোনিয়া আত্মহত্যা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের চাপে ১৪ অক্টোবর দুপুরে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুুলিশ। মামলার দ্বিতীয় দিনে দুই ধর্ষকদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে সমবেত মানববন্ধনে সোচ্চার কন্ঠে প্রতিবাদের আওয়াজ তুলে উপজেলার বিভিন্ন পেশার হাজার হাজার মানুষ।