হাটবোয়ালীয়া গ্রামে স্বামীর ঘরে নির্যাতনের শিকার গৃহবধু বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে
মেহেরপুর অফিসঃ চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া গ্রামে স্বামীর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন মহলের দ্বারস্থ হয়েও বিচার না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার গৃহবধু সুরাইয়া আকতার সান্তা ও তার মা নুরজাহান আক্তার মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেরাইল গ্রামের তার নানা বাড়িতে চলে আসে বলে জানা যায়। নির্যাতনের শিকার সুরাইয়া আক্তার সান্তা ও তার মা নুরজাহান আক্তার জানান, আমরা দুজনই মা ও মেয়ে নিজ নিজ শশুর বাড়ির লোক জনের নির্যাতনের শিকার হয়ে আজ বিচার দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার পাইনি। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার স্থানীয় ভাবে সালিশ করেও আমরা সমাধান পাইনি। নির্যাতনের শিকার মা ও মেয়ে জানান, পাঁচ বছর আগে হাটবোয়ালিয় গ্রামের মাঠ পাড়ার মজনুর ছেলে আল আমীনের সাথে বিয়ে হয় সুরাইয়া আক্তার সান্তার। বিয়ের পর ২ বছরের মাথায় তাদের একটি পুত্র সন্তান হয়। এর কিছু দিন পর থেকে সুরাইয়া আক্তার সান্তার উপর আল আমীন এর মা ছোট খাটো বিষয় নিয়ে গৃহবধু সান্তাকে নির্যাতন করতে থাকে। সংসারের শান্তির কথা বিবেচনা করে বিষয়টি প্রথম দিকে সান্তা কাউকে না জানিয়ে মুখ বুঝে সহ্য করে যায়। কিন্তু যত দিন যায় নির্যাতনের মাত্রা আরো বাড়তে থাকলে এক পর্যায়ে সান্তা তার মাকে বিষয়টি বলে। তার মা নুরজাহান পরে বিষয়টি সান্তার বাবাকে জানালে সে তাতে তেমন আমলে নেনটি বলে জানান সান্তা ও তার মা নুরজাহান আক্তার। এভাবে অনেক দিন শশুর বাড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রায় ৫ মাস আগে মেয়ে সান্তাকে তার মা নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে । গত বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আকষ্মিক ভাবে সান্তার শশুর বাড়ির লোকজন তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আসে। এসময় সান্তা হঠাৎ করে না যাওয়ার জন্য বাড়ির লোক জনকে বলে। এ প্রসঙ্গে সে বলে কয়েকদিন পর আমি শশুর বাড়িতে যাব। এ কথা শুনে সান্তার শশুর বাড়ির লোক জন ক্ষিপ্ত হয়ে জোর করে নিয়ে যেতে চাইলে সে আবারো বলে আমি কয়েকদিন পরে যাবো। এ কথা শুনে তার শশুর বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে গালি গালাজ করে চলে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সান্তার চাচা আনারুল ও তার ছেলে সোহাগ এবং হাসান তাকে ও তার মা নুরজাহান আক্তারকে লাঠি সোঠা দিয়ে মারধর শুরু করে বলে জানান সান্তা ও সান্তার মা নুরজাহান আক্তার। পরে তারা ঘরে উঠে নিজেদের রক্ষা করে। কিন্তু সান্তার চাচারা ঘরে ইট পাটকেল মারতে থাকে বলে জানান তারা। এ ঘটনার পর দিন সকালে (বৃহস্পতিবার) সান্তা ও তার মা নুরজাহান বেগম তার শশুর বাড়ি থেকে গাংনীর তেরাইল গ্রামে তার বাবা মৃত নজরুলের বাড়িতে চলে আসে। এ খবর পাওয়ার পর সান্তার বাবা সিরাজুল ইসলাম গাংনীতে চলে এসে তাদের কে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে সান্তার বাবার সাথে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমার মেয়ে মরে গেলেও সে তার শশুর বাড়িতে মরবে আমি দেখতে যাবনা। নির্যাতনের শিকার হয়ে আপনার মেয়ে যদি কোন অঘটন করে ফেলে এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়ের বাবা বলেন, সে মরে গেলে আমার কোন কিছু যায় আসেনা। এদিকে সান্তা ও তার মা নুরজাহান আক্তারকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে নুরজাহান আক্তারের স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন মারধর করে বলে মোবাইল ফোনে জানান নুরজাহানের ভাই রফিকুল ইসলাম। তিনি আরো জানান, মারধরের কারণে মা ও মেয়ে নিজেদের বাচানোর জন্য বাড়ি থেকে গাংনীতে চলে আসতে চাইলে তাদেরকে ঘরে আটকে আবারো মারধর করে। এ বিষয়ে মোবাইলে সান্তার বাবা সিরাজুলের সাথে জানতে চাওয়া হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।