প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে অসংখ্য রীটের কারনে
সদরুল অাইন / অাসমা অাফরোজ (সহ:)বার্তা সম্পাদক: চ্যানেল ফোর নিউজ, ঢাকা। এ নিয়ে বিব্রত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে বেতন বৈষম্য নিরসন না হওয়ায় বিক্ষুব্ধ সারা দেশের সহশিক্ষকরা। প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে মন্ত্রনালয়ের সদিচ্ছা ও অান্তরিকতার। জানা গেছে, হাইকোটের রায়ে প্রধান শিক্ষকরা উন্নীত বেতন স্কেল প্রাপ্ত হওয়ায় সহশিক্ষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।এতে প্রধান শিক্ষক ও সহশিক্ষকদের মধ্যে বেতন বৈষম্য দুই ধাপ থেকে বেড়ে ৩ ধাপে উন্নীত হয়েছে।এতে সারা দেশে প্রধান শিক্ষক সহশিক্ষকদের মধ্যে চরম দুরত্ব ও বিভাজনের সৃষ্টি হয়েছে।যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে শিক্ষা কার্যক্রমে। উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে প্রধান শিক্ষক ও সহশিক্ষকদের মধ্যে বেতনের পার্থক্য ছিল ১০ টাকা।গত পে-স্কেলের পূর্বে এই পার্থক্য ছিল ১০০ টাকা।পে-স্কেলে এই পার্থক্য দাড়ায় ১৪ এবং ১২ তম ধাপে অর্থাৎ ২ ধাপে। এই বৈষম্য পরিবর্তনের জন্য সহশিক্ষকরা এতদিন অান্দোলন করে অাসছিল। এই বৈষম্য নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থমন্ত্রী অাবুল মাল অাব্দুল মূহিতকে ২ বছর পূর্বে দায়িত্ব দেন।কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি এখনো। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেনীর মর্যাদা দিলেও ১০ গ্রেড না দেওয়ায় কেন্দ্রিয় প্রধান শিক্ষক সংগঠন অাদালতে যায়।অাদালত কয়েকদিন অাগে প্রধান শিক্ষকদের উন্নীত স্কেল প্রদানের রায় প্রদান করেছেন।এই রায়ের ফলে প্রধান শিক্ষক ও সহশিক্ষকদের মধ্যে বেতন বৈষম্য ৩ ধাপ বাড়ল অর্থাৎ প্রধান শিক্ষক ও সহশিক্ষকদের মধ্যে বেতনের পার্থক্য দাড়াল ১০ হাজার টাকায়।এর ফলে সারা দেশে প্রাথমিকের সহশিক্ষকরা বিক্ষুব্ধ হয় এবং অাগামি ১৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সমাপণী পরিক্ষার পর অান্দোলনের ঘোষণা দেয়। এদিকে প্রাথমিকের সহশিক্ষকদের কেন্দ্রিয় সংগঠনের পক্ষ থেকে কয়েকদিন অাগে বেতন বৈষম্য নিরসনের জন্য উচ্চ অাদালতে রীট করা হয়েছে।রীটের মাধ্যমে সহশিক্ষকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পাবেন বলে কেন্দ্রিয় সংগঠনগুলো অাশা প্রকাশ করেছেন।তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অধিকাংশ সহশিক্ষকই বিএ বা এমএ পাশ।রেজিস্ট্রার বিদ্যালয়গুলো জাতিয়করণ করায় অনেক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা সহশিক্ষকদের সমান বা কম।সমশিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ১০ হাজার টাকার বেতন বৈষম্য নিয়ে একই বিদ্যালয়ে এক সাথে চাকরি করা চরম অবমাননাকর বলে সহশিক্ষকরা মনে করেন।তাদের দাবি প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহশিক্ষদের বেতন স্কেলের মধ্যে এক ধাপ পার্থক্য যথাযথ ও যৌক্তিক।কিন্তু সরকার ও মন্ত্রনালয়ে যথাযথ উদ্যোগ, অান্তরিকতার অভাবে সহশিক্ষকদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হয়ে গত ২ বছর ধরে শুধু অাশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।বিভাজন সৃষ্টি করে সরকার ও মন্ত্রনালয় প্রধান শিক্ষক ও সহশিক্ষকদের মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি করেছে, যার প্রভাব পড়ছে পুরো প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায়। অন্যদিকে শতভাগ পদন্নোতির পথ বন্ধ রেখে এবং চলতি দায়িত্বের রীটের গ্যাড়াকলে পড়েও মন্ত্রনালয় চরম সমালোচিত হয়েছে সারা দেশে।বর্তমানে অাইনী জটিলতায় চলতি দায়িত্বও বন্ধ অাছে সদ্য জাতিয়করণকৃতদের রীটের কারনে।সেখান থেকেও বেরিয়ে অাসতে পারছে না প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রনালয়।অদক্ষতা, অদূরদর্শিতার কারনে মন্ত্রনালয়ের সকল কার্যক্রমে বাগড়া সাধছে সদ্য জাতিয়করণকৃতরা।ফলে প্রাথমিক মন্ত্রনালয় না পারছে পদন্নোতি দিতে, না পারছে চলতি দায়িত্বে শুন্য পদ পূরণ করতে এবং না পারছে উন্নতমানের ও অাকর্ষনীয় বেতন স্কেল দিয়ে বিসিএসের মাধ্যমে বেছে নেওয়া নন ক্যাডার শিক্ষদের পদায়নে।ফলে প্রাথমিক মন্ত্রনালয়ের সকল কার্যক্রম এখন লেজেগবুরে অবস্থা বিরাজ করছে। অন্যদিকে বেতন বিভাজন, পদন্নোতি অাটকে যাওয়া, চলতি দায়িত্ব প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় মন্ত্রনালয়ের চরম ব্যর্থতায় সারা দেশের সহশিক্ষকরা এখন রীট ও অান্দোলনের দিকে ধাবিত হচ্ছে।অার এর প্রভাব যে পড়বে পরিক্ষা, অাগামি বছরের শিক্ষা কার্যক্রম এবং অাসন্ন সংসদ নির্বাচনেও তাতে কোন সন্দেহ নেই।।