শ্রীপুরে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে চার্জ করা হয় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় অবাধে চলছে ব্যাটারিচালিত অবৈধ অটোরিকশা ও ইজিবাইক। দ্রুতগতি সম্পন্ন এসব অটোরিকশার কারণে সড়কে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। অন্যদিকে আবাসিক বিদ্যুৎ লাইনের মূলসংযোগ থেকে গোপনে লাইন টেনে অবৈধভাবে এগুলোর ব্যাটারি চার্জ দেয়া হচ্ছে। এসব যানবাহনের ব্যাটারিতে দিনে কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা চার্জ দিতে হয়।
এ কারণে বিদ্যুৎ ঘাটতির অতিমাত্রায় লোডশেডিংয়ে নাকাল হচ্ছে শিল্পাঞ্চল গাজীপুরের শ্রীপুর, এবং সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। বুধবার ও বৃহস্পতিবার সরজমিনে ঘুরে জানা যায়, চীন থেকে আমদানি করা ও দেশীয় নিুমানের যন্ত্রাংশ সংযোজনে তৈরি এসব অটোরিকশা ও ইজিবাইক নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন অলিগলিতে চলাচল করছে। এতে নিত্যদিন সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। আবার রাতের বেলায় এসব বাহনগুলোতে হেডলাইট না জ্বালানোর কারণে যত্রতত্র দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। এছাড়াও দেশীয় রিকশার বডিতে ব্যাটারি ও মোটর স্থাপন করে তৈরি করা হচ্ছে বিশেষ ধরনের অটোরিকশা।
শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন সড়কে প্রায় ৬/৭ হাজার অটোরিকশা ও ৩/৪ হাজার ইজিবাইক চলাচল করছে। এগুলো চার্জ দিতে প্রচুর পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে কিছু অবৈধ সংযোগ থেকেও এগুলো চার্জ করা হয়। এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিভাগের এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এছাড়া আবাসিক সংযোগ থেকেও চার্জ করা হচ্ছে বাণিজ্যিক এ অটোরিকশা ও ইজিবাইক।
উপজেলার জৈনাবাজার হিমেল মিয়ার গ্যারেজে, এমসিবাজার পুর্বপাশে শফিকুল ইসলামের গ্যারেজে, এমসি উত্তর (খাঁ-পাড়া), নয়নপুর, আবদার ফরিদপুর, গাজীপুর,বাঁশবাড়ি, কেওয়া, বরমী,কাওরাইদ, মুলাইদ এলাকাসহ প্রতিটা গ্যারেজে প্রতিদিন ১২/১৫টা এসব ইজিবাইক ও অটোরিকশাগুলো চার্জ দেয়া হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ চুরি যাচ্ছে। ফলে বাড়ছে লোডশেডিং। বৈদ্যুতিক মোটরযুক্ত এসব রিকশা সাধারণ রিকশার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি গতিতে চলাচল করায় জনপ্রিয় থাকলেও দুর্ঘটনাই ঘটছে বেশি।
অটোরিকশা চালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের একটি অটোরিকশা প্রতিদিন ৬ ঘণ্টা চার্জ দিতে গ্যারেজ মালিককে প্রতিদিন ৫০/৮০ টাকা করে দিতে হয়। অটোরিকশা চালক বাচ্চু মিয়া বলেন,অনেক গ্যারেজে মাসে ১৫০০শ’টাকা করে দিতেহয়। এতে রিকশা ৭-৮ ঘণ্টা চালানো যায়।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (২) মাওনা জোনাল অফিস ডেপোটি জেনারেল ম্যানেজার কামাল পাশার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসব অটোরিকশা ও ইজিবাইক আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। এদের হাতেনাতে ধরতে পারলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।