পাকিস্তানের মাদ্রাসাগুলোতে যৌন নিপীড়ন ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে"
সদরুল অাইন :
পাকিস্তানের মাদ্রাসাগুলোতে যৌন নিপীড়ন ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে মাদ্রাসায় পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থী। বার্তা সংস্থা এপির তদন্তে উঠে আসে এ তথ্য। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে বার বার অভিযোগ করা হলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না পুলিশ প্রশাসন এমনটাই দাবি নির্যাতিতদের অভিভাবকদের। সম্প্রতি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে ৯ বছরের এক শিশুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে মাদ্রাসার এক শিক্ষককে গ্রেফতার করা হলেও প্রমাণের অভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পাঞ্জাবের বাসিন্দা কাউসার পারভিন বলেন, 'আমার ছেলের সাথে যা হয়েছে ভাষায় বর্ণনা করা যাবেনা। সৃষ্টিকর্তার কাছে অনেক শুকরিয়া ও বেঁচে আছে। যদি ওকে মেরে ফেলতো তবে আমার কি হতো?? ছেলেকে কাছে পেয়ে এভাবেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
অনেক স্বপ্ন নিয়ে ছেলেকে মাদ্রাসায় পড়তে পাঠিয়েছিলেন পারভিন। ধর্মীয় শিক্ষার বদলে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে ছেলে ঘরে ফিরবে ভাবতেই পারেননি তিনি।
গণমাধ্যমে নির্যাতনের বর্ণনা দেয় শিশুটি। শিশুটি বলে 'আমি খুবই কান্না করছিলাম। সে আমাকে অনেক কষ্ট দিচ্ছিল। মুখ চেপে ধরেছিল যেন আমি চিৎকার করতে না পারি। পরদিন আমি মাদ্রাসা কয়েক বন্ধুকে বলি আমার পরিবারকে খবর দিতে। এরপর আমার মা আমাকে বাসায় নিয়ে আসে।
এ ঘটনায় জড়িত মাদ্রাসার ঐ শিক্ষককে গ্রেফতার করা হলেও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শিশুটির পরিবার। পুলিশ প্রশাসনের গাফিলতির বিষয়টিও তুলে ধরে শিশুটির ভাই।
শিশুটির ভাই বলেন, 'আমাদের সঙ্গে একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে। এমনটা হয়তো অনেকের সঙ্গেই হয় কিন্তু তারা মুখ খোলেন না। আমরা পুলিশের কাছে এ বিষয়ে সাহায্য চাই। অপরাধীকে গ্রেফতার করা হলেও পরবর্তীতে ছেড়ে দেওয়া হয়। এমন অপরাধীকে কেন ছেড়ে দেওয়া হল জানতে চাইলে পুলিশ উল্টে আমাদের হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে পাকিস্তানের মানবাধিকার এক কর্মী জানান লজ্জা, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার ভয়ে অনেকে বিষয়টি চেপে রাখেন।
মানবাধিকারকর্মী আই এ রহমান বলেন, 'মাদ্রাসাগুলো এমন নির্যাতনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে তবে লজ্জা এবং ভয়ের কারণে তা জনসম্মুখে আনেন না অনেক নির্যাতিত পরিবার। বিষয়টি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানাবে বলেও মনে করেন তারা।'
এসব ঘটনার প্রতিকার হওয়ার পাশাপাশি জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। পাকিস্তানে ২২ হাজারেরো বেশি নিবন্ধিত মাদ্রাসা রয়েছে। এছাড়া রয়েছে আরো বহু অনিবন্ধিত মাদ্রাসা। যেখানে রয়েছে অপর্যাপ্ত খাবার,চিকিৎসা এবং শিক্ষার অভাব।পাশাপাশি শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ। এ ঘটনায় জড়িতদের আটক করা হলেও পরবর্তীতে পুলিশি সহায়তায় বেরিয়ে পড়েন তারা বলে অভিযোগ স্বজনদের।