জয়পুরহাটে মাত্র দুইজন শিক্ষক দ্বারা চলছে শিমুলিয়া সরকারি স্কুলের পাঠদান ক্ষিপ্ত অভিভাবক সহ এলাকাবাসী
জয়পুরহাট আক্কেলপুর প্রতিনিধিঃ নিরেন দাস
জয়পুরহাটের সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নে শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ টি পদের বিপরীতে ২ জন শিক্ষক কর্মরত থাকায় মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে কমলমতি শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম।
সকল প্রকার নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে সেই বিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষিকার অন্য স্কুলে সংযুক্ত প্রদান করায় ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক সহ স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা যায়। সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই সংযুক্তি আদেশ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগও।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯৯৬ সালে। বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে জাতীয়করণের আওতাভুক্ত হয়।
উক্ত বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সহ মোট ৫ জনের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ইন্তেজার রহমান, মমতা রানী ও কামনা রানী নামে ৩ জন শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষক ইন্তেজার রহমান তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনও করছেন দীর্ঘদিন ধরে। কামনা রানী নামে একজন জয়পুরহাট (PTI) তে ট্রেনিংয়ে রয়েছেন আর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইন্তেজার রহমান ও মমতা রানী এই দুই জন শিক্ষক দ্বারা দীর্ঘ দিন ধরে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছেন তারা।
এ অবস্থায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম একেবারেই ভেঙে পড়েছে। অথচ ওই বিদ্যালয়ের অপর এক সহকারী শিক্ষিকা সুইটি বেগম ২০১৫ সাল থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংযুক্তি আদেশে জয়পুরহাট শহর সরকারি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছেন। যেখানে ৬ জন শিক্ষকের পদের বিপরীতে ৬ জন শিক্ষকই কর্মরত আছেন। সংযুক্তি আদেশে আসা সুইটি বেগমকে দিয়ে শিক্ষক সংখ্যা হচ্ছে ৭ জন। যা পদ সংখ্যার অতিরিক্ত শিক্ষক কম থাকা স্কুলে সংযুক্তি আদেশে শিক্ষক দেওয়ার নিয়ম থাকলেও ওখানে সেই নিয়মকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
এদিকে শিমুলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটের কারণে লেখাপড়া বিঘ্ন হচ্ছে মর্মে সুইটি বেগমের সংযুক্তি আদেশ বাতিল চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে পাঠানো পত্রও দীর্ঘ দিনেও কার্যকর হয়নি এমন অভিযোগও পাওয়া যায়। ফলে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের খাম খেয়ালি পনায় বন্দী হয়ে পড়েছে শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিশু শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন যে শিশুদের সময় পার হয়ে যাচ্ছে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষালাভ থেকে।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, ইন্তেজার রহমান জানান শিক্ষক সংকটের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে একই সময়ে দুটি ক্লাসে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রমনাথ বর্মণ, নুপুর ও ইতি রানী জানাই শিক্ষক না থাকায় ক্লাস ঠিক মতো হয় না। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যোগেন চন্দ্র বর্মণ জানান, সুইটি বেগমের ডেপুটেশন বাতিলের জন্য বার বার আবেদন নিবেদন করেও লাভ হয়নি। ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি মো. নুরুজ্জামান মণ্ডল বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার মান দিনদিন ভেঙে পড়েছে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে সরকারি স্কুলের নাম তিনি আরো প্রশ্ন তোলেন এই বিদ্যালয় থেকে বেতন ঠিকিই তুলবেন অথচ কাজ করবেন না এ কেমন সিদ্ধান্ত শিক্ষা বিভাগের। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ইন্তেজার রহমান জানান, শিক্ষক সংকটে আমি দিশেহারা। মাত্র ২ জন শিক্ষক দিয়ে একটা বিদ্যালয় চলতে পারে কি করে তবুও স্কুল পরিচালনা চালিয়ে যাচ্ছি যে কারণে অফিসের কাজেও বাইরে যেতে পারি না আমি।
অপরদিকে ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল কবীর বলেন, শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটের কারণে সুইটি বেগমের মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সংযুক্তি আদেশ বাতিল করার জন্য ২০১৭ সালের ৮ আগস্ট মহাপরিচালকের নিকট পত্র দিয়েছি। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন ফলাফল এখনো পাওয়া যায়নি বলেও জানান সাথে হতাশার সহিত দুঃখ প্রকাশও করেন এই শিক্ষা অফিসার।