নেকাপড়া শিখলিই যে চাকরি বাকরি হবি তাতো না !
এম তাজুল ইসলাম, সারিয়াকান্দি বগুড়া থেকে: ‘‘হামাগরে সংসারত অনেক কাজ কাম। ছোলপোলেগেরেক কি খালি নেখাপড়া শিখেলেই চলবি। স্কুলত যাওয়া আসার পাশাপাশি সংসারেরও কামকাজ না করলে পেটত ভাত আসপ কুন্টি থেকে। আগে পেটত ভাত পরে নেকাপড়া। এডে ছাড়াও নেকাপড়া শিখলি যে চাকরি বাকরি হবি তাতো না ! তাছাড়া দেশে যে হারে নিয়োগ হাণিজ্য শুরু হছে এতে হামাগরে ছোলপোলের নেকাপড়া হরে কোনো হান্স হয়ইবো না। হেজন্য বাধ্য হয়েই ছোলোক সংসারের কাজ কামও শিকামেনচ্ছি’’ এক নাগারে কথাগুলো বললেন বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের যমুনার নয়াপাড়া চর গ্রামের বাসিন্দা সাদেক আলী প্রাং। তিনি জানান, ওই গ্রামের স্ত্রী, তিন ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার তার। জমি বিঘা চারেক। জমিতে বিভিন্ন রকমের ফসলের চাষাবাদ করে সংসার চলে তার। চাষাবাদের জমি কম হওয়ায় যাবতীয় কাজ নেজেকেই করতে হয়। কামলা-কৃষাণ নেওয়ার মত সমর্থ তার হয় না। এজন্য সকাল থেকে রাত অবধি কাজ করতে হয় তাকে। তবে ছেলে মেয়ের মধ্য মেয়ে সাবরিনা আক্তার স্থানীয় নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। দুই ছেলের মধ্য সজিব একই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র। আরেকটি ছোট হওয়ায় বাড়িতে মায়ের সাথে থাকে। তিনি আরও জানান, যমুনায় বন্যার পানি এলে ফসল তলিয়ে যায়। এজন্য তাকে পরিবার পরিজন নিয়ে খাদ্য কষ্টে পড়তে হয় কোন কোন বছর। টানা পোড়েন সংসারে বাধ্য হয়েই ছেলে-মেয়েকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন কাজ কর্ম সারতে হচ্ছে তাকে। স্কুল থেকে যৎ সামান্য বৃত্তির টাকা পায় ঠিকই কিন্তু সংসারের উপর সে টাকার তেমন কোন প্রভাব পরে না। তিনি আরও বলেন, কেবল আমি নই চরের অধিকাংশ পরিবার থেকেই স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে সংসারের কাজ কর্ম করে নিয়ে সংসারের দু:খ দুর্দশা লাঘবের জন্য তাদেরকে কাজে লাগানো হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন “চ্যানেল৪” কে জানান, গ্রাম এলাকায় কেউ কেউ ছেলে মেয়েদের নিকট থেকে সংসারের কাজ কাম করে নেওয়ায় লেখাপড়ায় তারা পিছিয়ে পড়ে। লেখাপড়া শিখেও ভালো চাকরী করতে পারেন না। এজন্য তারা অন্যকে দায়ী করে থাকেন। তবে ইচ্ছা থাকলে কাজ করেও ভালো ফলাফল করা সম্ভব।