আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ: পোপ ফ্রান্সিস
বাংলাদেশ আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত— বলেন ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস।
শনিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁও হলি রোজারিও চার্চে খ্রিস্টান যাজক, ধর্মগুরু ও ধর্মীও নেতাদের সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় পোপ হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা প্রদর্শনের তাগিদ দেন।
তিন দিনের ঢাকা সফরের শেষ দিন শনিবার ব্যস্ত সময় পার করছেন পোপ ফ্রান্সিস।
সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মাদার টেরিজা হাউজ পরিদর্শন করেন পোপ। সেখানে হলি রোজারিও চার্চে খ্রিস্টান যাজক, ধর্মগুরু ও ধর্মীও নেতাদের সমাবেশে ভাষণ দেন তিনি।
পোপ বলেন, মানুষে মানুষে বিভেদই সমাজের খুঁত, আর বাংলাদেশ হলো আন্তঃধর্মী সম্প্রীতির উজ্জ্বল উদাহারণ।
নিন্দা করা মানুষের একটি ত্রুটি উল্লেখ করে পোপ বলেন, পিছনে কথা বলা সমাজের শান্তি বিঘ্নিত করে— পরনিন্দা করা এক ধরনের সন্ত্রাসবাদ। কারণ পরনিন্দার মতো সন্ত্রাসবাদও আড়ালেই হয়ে থাকে।
উপস্থিত যাজকদের উদ্দেশ্যে পোপ বলেন, মানুষ যেন মানুষকে ভালোবাসে।
হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা প্রদর্শনেরও তাগিদ দেন তিনি।
মানুষ-মানুষে বিভেদকে ‘সমাজের খুঁত’ আখ্যায়িত করে পোপ বলেন, বাংলাদেশ হলও আন্তঃধর্ম ও ঐকতানের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
পোপ তার ভাষণে খ্রিস্টান যাজক, ধর্মগুরু ও ধর্মীয় নেতা প্রত্যেককে ‘শুভ বীজ’ অভিহিত করে বলেন, ‘বীজের বেড়ে উঠার খেয়াল রেখ, বীজকে কোমল রেখ। অশুভ বীজ ও আগাছা থেকে সাবধান থাকতে হবে। ঈশ্বরের কাছে প্রতিদিন প্রার্থনা করবে যাতে তিনি বীজকে শুভ রাখেন, কারণ তিনিই বীজ তৈরি করেছেন। বীজকে এমনভাবে পরিচর্যা কর, যাতে তা ঈশ্বরের আত্মজ্ঞান হিসেবে প্রতীয়মান হয়।
কোনো মানুষকে অপছন্দের কথাটি যদি সম্ভব হয় মুখের সামনে বলে দাও, যদি তা না পারও তাহলে এই কাজে সহায়তা করতে পারে এমন শুধু একজনকে বলবে, আর কাউকে নয়—বলেন পোপ।
উদ্বিগ্নতা ও ভারাক্রান্ত মন থেকে অশুভ বীজ সৃষ্টই হয়, তাই নিজকে সব সময় উৎফুল্ল রাখবে—জীবন সবচেয়ে কঠিন সময়েও তোমাকে হাসতে হবে বলেন পোপ।
চার্চের কবরস্থান পরিদর্শন করেন পোপ ফ্রান্সিস। বিকেল সোয়া ৩টায় নটরডেম কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন পোপ ফ্রান্সিস। পরে বিকেল ৫টায় রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি।