একটি জীবনের মূল্য মাত্র আড়াই লাখ টাকা !
অন্তু দাস হৃদয়, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :
বিলকিস আক্তারের জীবনের মূল্য মাত্র আড়াই লাখ টাকা। আর এ আড়াই লাখ টাকাই কি তার ছোট দু’টি শিশু সন্তানকে লালন পালনের মধ্যে মানুষ করতে পারবে ?
এই প্রশ্নটি এখন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের চৌবাড়িয়ার মানুষের মধ্যে। তার পুত্রের জেএসসি’র পরীক্ষার অজুহাত দেখিয়েও দরিদ্র বিলকিস চিকিৎসকের হাত থেকেও রক্ষা পাননি।
বিলকিস আক্তার চিকিৎসকের কাছে বলেছেন, আমার ছেলের পরীক্ষা শেষে আমি ক্লিনিকে ভর্তি হব।
কিন্তু চিকিৎসক জানান, দুই তিন দিন দেরী করলে ক্যান্সার হবে। আজই অপারেশন করতে হবে।
এ সময় অসহায় স্বামী-স্ত্রীর জীবনকে বাঁচানোর জন্য শেষ মুহূর্তে চিকিৎসকের কথার ভয়ে বিলকিসতে ভর্তি করেও বাঁচাতে পারলেন না।
অবশেষে চিকিৎসকের ভুলের কারণে জীবন দিতে হলো বিলকিস আক্তার (৩৭)কে। তার স্বামীর নাম মোঃ সাইফুল ইসলাম।
টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সোনিয়া নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ গত সোমবার লাবলুর মাধ্যমে আড়াই লাখ টাকা নিহত বিলকিস আক্তারের স্বামী সাইফুল ইসলামের হাতে তুলে দেন। অসহায় স্বামী অবাক হয়ে বলে উঠলেন, একটি জীবনের মূল্য কি আড়াই লাখ টাকা।
জানা যায়, গত রোববার শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ডে সোনিয়া নার্সিং হোমে বিলকিস আক্তার নামের এক গৃহবধূকে টনসিল অপারেশন করতে গিয়ে ভুল চিকিৎসার শিকারে তার মৃত্যুর অভিযোগ এনেছে তার পরিবারের লোকজন।
এ সময় অপারেশন কক্ষ থেকে সরকারি চিকিৎসক ডাঃ এস এম মনিরুজ্জামান পালিয়ে যাওয়ার কথাটি এখন আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ডাঃ এস এম মনিরুজ্জামান টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ই এন টি বিভাগ।
এ প্রসঙ্গে ডাঃ মনিরুজ্জামানের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মৃত্যুর পর লাশ কাটা ছেঁড়াসহ বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে সমঝোতার বাধ্য করার অভিযোগ নিহত গৃহবধূর আত্মীয়স্বজন এবং নিহত গৃহবধূর সাফিয়া (৯) ও সাব্বির (১০) নামে দু’টি সন্তান রয়েছে।
তারা এখন মা-মা বলে কাঁদছেন। আর তাদের সান্তনা দেয়ার জন্য এলাকাবাসী পাশে থাকলেও তাদেরও একই কথা মায়ের আদর-পূরণ করবে কি ভাবে।