নওগাঁয় থামানো যাচ্ছে অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ নীতিমালা তোয়াক্কা করছে না মাকিলরা
জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ নিরেন দাস।
জয়পুরহাট জেলার পার্শ্ববর্তী জেলা যেমন নওগাঁ ঠিক তেমনি জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলা আর নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলা পাশাপাশি সীমান্ত এলাকা। তাহার সূত্রধরে আক্কেলপুর উপজেলার বেশিভাগ কৃষি ফসলের জমি বদলগাছী উপজেলার মিঠাপুর ইউপির খাদাইল মৌজায় যে গ্রাম্য পরিবেশের ফসলি নির্ভরশীল বদলগাছী উপজেলার কৃষক সহ আক্কেলপুর উপজেলার কৃষকরা আজ সেই সব কৃষি নির্ভরশীল কৃষকরা কোটিপতি ইটভাটা মালিকদের টাকার ক্ষমতার শক্তির কাছে হার মেনে নিয়ে হতাশায় জীবন কাঁটাচ্ছে কৃষকরা।
এমনকি সেই সব কোটিপতি ইটভাটা মালিকরা নীতিমালার তোয়াক্কা না করে ফসলি উর্বর জমির টপ সয়েল কেটে ইট তৈরি করছে নওগাঁ জেলায় গড়া ওঠা শতশত ইটভাটা গুলোতে। তদন্ত সূত্রে পাওয়া বর্তবান ভাটা মালিকরা অসহায় দারিদ্র কৃষকদের অভাবী দুর্বলতারা সুযোগ কাছে লাগিয়ে সেইসব কৃষকদের সামান্য কিছু টাকা দিয়ে জমির টপ সয়েল কেটে তোলায় এসব জমি উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে।
এইসব জমির উৎপাদন ক্ষমতার বিষয়ে কৃষি বিভাগের গবেষণায় তারা জানিয়েছেন এইভাবে জমির টপ সয়েল কাটলে এতে মাটির জৈব শক্তি কমে গিয়ে দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষকরা।
আবার এদিকে জেলার শতভাগ ইটভাটা গুলোতে জ্বালানি কয়লার বদলে জ্বালানী হিসেবে পোড়ানো জীব নির্ভরশীল কচিকাঁচা গাছের কাঠ। এতে স্কিন ক্যানসার সহ কয়েক কিঃমিঃ এর ফলনশীল গাছপালা ও ফসলের চরম ক্ষতি হচ্ছে। উক্ত বিষটি নিয়ে নওগাঁ জেলা প্রশাসন বলছে পরিবেশ নীতি লঙ্ঘন কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমন ব্যবস্থার নেয়ার কথা গত দেড় মাস যাবত বলে আসছেন প্রশাসন কর্তৃপক্ষ এই দেড় মাসে এখনো কোন ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বরং অবাদে গড়ে উঠছে আরো বেশ কয়েকটি নতুন নতুন ইটভাটা।
যেমন ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে নওগাঁর প্রায় শতাধিক ভাটার নতুন ইট তৈরির প্রস্ততির কাজে নেমে পড়েছে। নওগাঁ জেলার ১১ টি উপজেলার অধিকাংশই শতশত একর ফসলি জমির মাঝে সহ আবাসিক এলাকা গুলির উপর নিত্য নতুন অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে ইটভাটা মালিকদের টাকার শক্তিতে। এসব ইটভাটায় ইট প্রস্তত করার জন্য আবাদি জমির উর্বর টপ সয়েল কেটে তোলা হচ্ছে জৈব সারে ভরপুর ফসলি জমির মাটি।
যে পরিবেশ নীতিমালায় নির্দেশিকায় উল্লেখ করে লেখা রয়েছে কোন প্রকার উর্বর জমির মাটি ব্যবহার এবং আবাদ হয় এমন এলাকায় ভাটা করা যাবে না।
কিন্ত নওগাঁ জেলার বেশির ভাগ ইটভাটার মালিকরা সর্বস্তরের প্রশাসন, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অর্থের বিনিময়ে চুপ করিয়ে। সরকার বিরোধী সরকারি পরিবেশ বান্ধব নীতিমালাকেও তোয়াক্কা করছে না অর্থশালী সেই সব ভাটা মালিকরা। সাথে ইট তৈরির জন্য জ্বলানি কয়লার বদলে প্রতিটি ইট ভাটায় ব্যাপক হারে জ্বালানি হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে কচিকাঁচা গাছ কেটে কাচাকাচা কাঠ যে কাচা গাছের কাঠের উড়ন্ত ছাই গুলি উড়ে কয়েক কিঃমিঃ এর আবাদি ফসলি জমির মালিকরা ফসল ফেলাতে পারছে আবার ফসল লাগালেও তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা সাথে আবাসিক এলাকার জনগণ শ্বাসকষ্ট, চর্ম রোগের ভয়াবহ ঝঁকিতে পরছে।
যেসব ভাটার ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীরা অভিযোগ তুলে কান্না ভরা কন্ঠে বলেন আমরা গরীব মানুষ আমাদের জীবন চলে চাষআবাদ করে তাও বন্ধ হয়ে গেছে বড়লোক ভাটার মালিকদের জন্য এখন তো আমাদের বিবি বাচ্চাদের না খেয়ে মরতে " এমন নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ কৃষিনির্ভরশীল কৃষকদের। এমননি তারা চ্যানেল ফোর টিভির কাছে অভিযোগ তুলে বলেন" শোনেন সাংবাদিক ভাই আপনাদের মতো অনেক সাংবাদিকরা আমাদের কাছে আসে দুঃখের কথা শুনে আর বলে আপনারা চিন্তা করবেন এবার ভাটা বন্ধ হবে, তার আর সেই সব সাংবাদিক ভাইরা আসেনা। আপনারাও কি তাদের মতো শুনে শুধু আশ্বাস দিয়ে যাবেন নাকি কোন প্রতিবাদ করবেন।
সেই সব কৃষকশ্রেণীর মানুষরা আরও একটি কথা চ্যানেল ফোর টিভি কে বলেন যা চিরসত্য কথা তারা বলেন যে ভাই একমাত্র এই কোটিপতি ইটভাটা মালিকদের অবৈধ ভাটা বন্ধ করতে পারে শুধু মাত্র সৎ সাংবাদিকরা যারা সঠিক প্রচারটা তুলে ধরলে আমাদের দীর্ঘ বিশ্বাস তাদের অন্যায়ের হাত থেকে আমাদের মতো শতশত কৃষকরা আবারো আবাদ ফসল ফেলে স্বচ্ছল জীবনে ফিরে আসতে পারবো।
এমনভাবে জরিপে নওগাঁ জেলার ১১ টি উপজেলার মধ্যে মহাদেবপুর উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের লক্ষন চন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক জমির উদ্দন বলেন, তিনি তার বসত সংলগ্ন দুই বিঘা জমিতে ফুল কপি লাগিয়েছেন কিন্ত পাশেই দুটি ইটভাটা থাকায় তার কপির ফলন বিপর্যয় হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মুনসুর সরকার, সামসুদ্দিনসহ আরো বেশ কয়েকজন জানান, ইটভাটার কারণে গাছের ডাব শুকিয়ে যাচ্ছে, আম-কাঁঠাল গাছের পাতা কুকড়ে যাচ্ছে তাছাড়া অনেকেই স্কিন ক্যানসারেও আক্রান্ত হয়েছে এলাকার শতাধিক শিশু বাচ্চা সহ বিভিন্ন বয়সী মানুষেরা ।
নওগাঁ জেলা সদর, মান্দা, মহাদেবপুর, নজিপুর, বদলগাছী, ধামুইর হাট, উপজেলায় অধিক হারে ইটভাটা গড়ে তোলা হচ্ছে আবাসিক এলাকায়।
যে সব ইটভাটা গড়ে না তোলার জন্য এলাকাবাসী মানববন্ধন সহ জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত দিয়ে ও এখনো কোন প্রকার ব্যবস্থা তারা গ্রহণ করেনি।
সম্প্রতি নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলাতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সহ জনসাধারণ একটি বিশাল মানববন্ধনও করেছিল। যে মানববন্ধনে দাবি জানানো হয়েছিল বদলগাছী উপজেলার মিঠাপুর ইউপির উজালপুর গ্রামে নির্মাণাধীন দুটি ইটভাটা বন্ধের দাবী যার কোন বিভাগীয় পরিবেশ বান্ধব অনুমোদন নেই।
এমনি বিভিন্ন সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পরে ভাটা মালিকরা পরিবেশের ক্ষতির কথা স্বীকার করে বলেছেন বিকল্প উপায় না থাকায় তারা বাধ্য হচ্ছেন আবাদি জমির মাটি ব্যবহার করতে।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা ইটভাটা মালিক সমিতি সভাপতি, আবদুস সালাম জানান, ইটভাটার ছাড়পত্রে বলা হয় অনাবাদি জমি আর অনাবাসিক এলাকায় ভাটা গড়ে তোলার কথা। কিন্ত কোথায় আছে এমন জমি বলেন সবি কি নিয়মপূর্বক মতে চলছে বলে তিনি এমন কথা বলে।
মহাদেবপুর ভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন ও স্থানীয়(AB) ব্রিকসের মালিক বিমান হোসেন বলেন, ইচ্ছে করে আমরা পরিবেশের ক্ষতি করছি এটা ঠিক নয়। মাটি সংগ্রহ করার কোন উপায় নেই ফলে আবাদি জমির মাটি ব্যবহার করতে হয় মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মফিদুল ইসলাম বলেন, এভাবে চলতে থাকলে অপুরণীয় ক্ষতির মুখে পড়বে সমগ্র জেলার কৃষি নির্ভরশীল কৃষকরা।
যত্রতত্র ইটভাটা নির্মাণে জেলায় পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে তা ছাড়া জৈব শক্তি হারাচ্ছে আবাদি জমি।
এদিকে জেলায় যে পরিমান ইটভাটা রয়েছে তা যথেষ্ট বলে মনে করেন বদলগাছী উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা অলি আহম্মেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, পরিবেশের অপুরণীয় ক্ষতি রোধে নওগাঁয় আর নুতন কোন ইটভাটার অনুমতি না দেওয়ার ভাল হবে তিনি বলেন।
নওগাঁয় পরিবেশ অধিদপ্তর কোন অফিস নেই। বগুড়া ও রাজশাহী থেকে এ অঞ্চলে নজর দারী করা হয়ে থাকে জেলার মাসিক সমন্বয় সভায় তাদের একজন প্রতিনিধি এসে প্রতিবেদন পাঠ করে দায় পার করে আসছেন।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রশাসক ডঃ আমিনুর রহমান বলেন, যারা পরিবেশের বিধান মানবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে নওগাঁয় ১৩৫ টি ইট ভাটার মধ্যে ৬৮ ইটভাটার বৈধ ছাড়পত্র রয়েছে তা বাদে সব ইটভাটা অবৈধ ভাবে চলানো হচ্ছে যাদের তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে দূত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে জেলায় যে পরিমান ইটভাটা রয়েছে তা যথেষ্ট বলে মনে করেন বদলগাছী উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা অলি আহম্মেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, পরিবেশের অপুরণীয় ক্ষতি রোধে নওগাঁয় আর নুতন কোন ইটভাটার অনুমতি না দেওয়ার ভাল হবে তিনি বলেন।
নওগাঁয় পরিবেশ অধিদপ্তর কোন অফিস নেই। বগুড়া ও রাজশাহী থেকে এ অঞ্চলে নজর দারী করা হয়ে থাকে জেলার মাসিক সমন্বয় সভায় তাদের একজন প্রতিনিধি এসে প্রতিবেদন পাঠ করে দায় পার করে আসছেন।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রশাসক ডঃ আমিনুর রহমান বলেন, যারা পরিবেশের বিধান মানবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে নওগাঁয় ১৩৫ টি ইট ভাটার মধ্যে ৬৮ ইটভাটার বৈধ ছাড়পত্র রয়েছে তা বাদে সব ইটভাটা অবৈধ ভাবে চলানো হচ্ছে যাদের তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে দূত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।