কক্সবাজারের মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানে ইকো অ্যাডভেঞ্চার
সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও, কক্সবাজার প্রতিনিধি, কক্সবাজার-চট্রগ্রাম মহাসড়কের লাগোয়া চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানে দেশের প্রথম ইকো অ্যাডভেঞ্চার করা হয়েছে। নীরবে নিরাপত্তায় বন্যপ্রাণী দেখার পাশাপাশি ইকো অ্যাডভেঞ্চারের নানা ব্যতিক্রমী আইটেম গড়ে তোলা হয়েছে ইতিমধ্যে। ৩৯৫.৯৩ হেক্টর বনভূমিতে গড়ে ওঠা অ্যাডভেঞ্চারের কাজ শেষ পর্যায়ে। আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যটক-দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এটি। মেছোবাঘ, হাতির পাল, বানর, উল্টোলেজ বানর, বনবিড়াল, খাটাশসহ শত প্রকার বন্যপ্রাণী, বনমোরগ, শুশুক, ইগল, সবুজ ঠোঁট ফিঙে, চিল, শ্যামাসহ দেড় শতাধিক প্রজাতির পাখি, গুইসাপ, হ্যাজা সাপসহ নানা প্রজাতির সাপ ও বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ রাখা হচ্ছে। তাও আবার দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় রেখে। তবে শর্ত হচ্ছে দর্শকদের নীরবতা পালন করতে হবে। শুধু তাই নয় বন ভ্রমণকারীদের জন্য রয়েছে ইকো অ্যাডভেঞ্চার। এর মধ্যে অনেক নতুন অ্যাডভেঞ্চার রয়েছে যা অত্যন্ত রোমাঞ্চকর। একদিকে বনের ভেতর বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ অন্যদিকে রোমাঞ্চকর ইকো অ্যাডভেঞ্চারে নিজেদের মাতিয়ে রাখতে পারবেন প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণকারীরা যা বাংলাদেশে প্রথম। এসব কথা বলেন কক্সবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উত্তর) হক মাহবুব মোরশেদ।
বাংলাদেশে পর্যটক আর দর্শনার্থীদের জন্য প্রথম ইকো অ্যাডভেঞ্চার ব্যবস্থাপনা করছে ন্যাচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) এর ক্রেল প্রজেক্ট। ন্যাচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. আলম খান বলেন, মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানের অভয়ারণ্যে হচ্ছে এ ইকো অ্যাডভেঞ্চার। খুব তাড়াতাড়ি সময়ে পর্যটকসহ সকল দর্শনার্থীর জন্য উন্মুক্ত করা হবে। তবে অবশ্যই বন্যপ্রাণীদের স্বার্থে কিছু শর্ত পালন করতে হবে দর্শনার্থীদের।
নেকমের সাইট অফিসার মো. আবদুল কাইয়ুম বলেন, বিশাল বনাঞ্চলে যেসব অ্যাডভেঞ্চার রয়েছে এর মধ্যে ট্রি অ্যাডভেঞ্চার, সাইক্লিন, হ্রদে বোটিং, ফিশিং, টি হাউস, ইকো হাউস, তাঁবু জলসা, হেমগ, গাছে ঝোলা, ট্রেল হাইকিং, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার অন্যতম।
ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: আবদুর রাজ্জাক বলেন, রাতে বা দিনে গাছের মাছায় উঁচুস্থানে নিরাপদে বন্যপ্রাণী দেখা, রাতে গাছে রাত্রি যাপন, ঝুলিয়ে এক গাছ থেকে অন্য গাছে যাওয়া, গাছের দোলনায় গা দুলিয়ে দেওয়াসহ প্রকৃতির কোলে বিশ্রাম নেওয়ার অনন্য সুযোগ থাকছে এখানে। দর্শনাথীদের জন্য ইকোট্যুর গাইড রয়েছে। রয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ।
মেধাকচ্ছপিয়া বিট অফিসার সৈয়দ আবু জাকারিয়া বলেন, এটি বাংলাদেশের বৃহৎ মাদার গর্জন বাগান। উঁচু নিচু পাহাড়, সমতল এলাকা নিয়ে ৩৯৫.৯৩ হেক্টর বনভূমিতে মাদারট্রি গর্জন ছাড়াও ডুমুর, বহেড়া, অর্জুন, বাঁশঝাড়, বেত, বাদাম, ছাতিমসহ নানা প্রকারের গাছ রয়েছে। যা পর্যটকদের ভ্রমণে আকৃষ্ট করবে।
মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান সহ-ব্যাবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এসএম আবুল হোসেন বলেন, মেধাকচ্ছপিয়া অত্যন্ত ঘন বন। এখানে বিরল প্রজাতির শুশুক পাখি, বিরল প্রজাতির উল্টো লেজ বানর রয়েছে। রয়েছে হাতির প্রজনন স্থান। নীরবে হাঁটা আর উঁচু স্থানে অবস্থান করে নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ এখানে রয়েছে।
১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ইং