মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে চ্যানেল ফোর নিউজ'র বিশেষ সম্পাদকীয় "মহাকালের অমোঘ সত্যের বেদীতে একদিন ইতিহাস কথা বলবেই"
সদরুল অাইন: বার্তা সম্পাদক,চ্যানেল ফোর নিউজ, ঢাকা :
বিজয় দিবস অাসে, বিজয় দিবস চলেও যায়। অন্যান্য জাতিয় দিবসগুলোর মত মুখরিত হয় বিশেষ দিনগুলো।রাজনীতির মঞ্চ মুখরিত হয় নেতাদের পদচারণায়।বক্তৃতার তুবড়ি ছোটে, অাশা অার অাশ্বাসের ফানুস উড়ে দেশের সর্বত্রই। রক্তিম সূর্যটা বিদায় নেয় দিন শেষে।অারেকটি ভোর অাসে জীবন অরণ্যে।কর্মমুখতার চাঞ্চলতায় হারিয়ে যায় সেই সব প্রতিশ্রুতি।।
৭১'র সাড়ে সাত কোটি বাঙালি সেদিন যারা ভাই হারিয়েছিল, মা বাবা সন্তান হারিয়েছিল, সেদিন যে বোনটি রাজাকার ও পাক হায়েনাদের হাতে সম্ভ্রম হারিয়েছিল,তাদের বুকের গভীরে প্রথিত বেদনার লোমহর্ষক দগদগে ঘা প্রশমিত হয় না অথবা হবারও নয় কোনদিন।
পাকি ও এদেশীয় রাজাকার অাল বদর অাল শামসরা বিশ্ব ইতিহাসে সাড়ে ৯ মাস ধরে যে বর্বরতার ইতিহাস রচনা করেছিল, তা এখনো রক্ত ঝরায় প্রতিটি দেশ প্রেমিক বাঙালির হৃদয়ে।
জাতি হিসেবে স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে অামাদের অর্জন অনেক।যুদ্ধাপরাধীর বিচার হয়েছে এবং বিচার প্রক্রিয়া চলমানও।তবুও জাতির ইতিহাসে এখনো এটা দূর্ভাগের বিষয় এই যে, তরুণ প্রজন্ম ৭১ এর নির্মমতার সঠিক ইতিহাস জানে না।
অামরা সে বিভৎস ইতিহাস জানাতে পারিনি।যদি এ জাতির রাজনৈতিক নেতৃত্ব ৭১'র সঠিক ইতিহাস অাজকের প্রজন্মকে জানাতে পারত, তবে এদেশের কথিত অনেক রাজনৈতিক দলকেই ইতিহাসের অাস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হতো।
৭১'র ভয়াল উত্তাল দিনগুলোর নির্মমতা যদি এ প্রজন্ম জানত, তবে পাকিদের দালালরা মুক্তিযুদ্ধের কথিত ঘোষক সেজে এদেশের রক্তস্নাত পবিত্র মাটিতে দাড়িয়ে চিহৃিত রাজাকারদের গাড়িতে স্বাধীনতার রক্তাত্ব পতাকা তুলে দিতে পারত না।
স্বাধীনতার জনকদেরকে প্রতি মূহুর্তে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশকে তিলে তিলে উন্নয়নের মহাসড়কের দিকে এগিয়ে নিতে সংগ্রাম করতে হত না।
একদিন সত্য সমাগত হবে, অপশক্তির বর্বরতা থমকে যাবে,বাঙালি জাতি সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করবে হয়ত।অার তার জন্য পাড়ি দিতে হবে অনেক সাহারা, অনেকগুলো বাধার হিমালয়।
সেই শুভক্ষণটি একদিন বাঙালি জাতির জীবনকে ছুঁয়ে যাবেই ইনশাল্লাহ।অনাহত সেই দিনটির জন্য অপেক্ষা করতে হবে কিছু কাল, কিছু যুগ।মহাকালের অমোঘ সত্যের বেদীতে একদিন ইতিহাস কথা বলবেই।
সেই সুদুর দিনের প্রত্যাশায়, সেই নতুন সকালের নতুন সূর্যের অালোক ছটায় অালোকিত হোক, প্রতিটি বাঙালির জীবন, অামাদের এই প্রিয় বাংলাদেশ।।