বিশ্ব ইজতেমা শুরু আজ টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে দলে দলে আসতে শুরু করেছেন মুসল্লিরা।
মো.রবিউল ইসলামঃ
বিশ্ব ইজতেমা শুরু আজ
টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে দলে দলে আসতে শুরু করেছেন মুসল্লিরা। ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে আজ শুক্রবার। এ ইজতেমায় যোগ দিতে মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি গত বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কাকরাইল শূরা কার্যালয়ে পৌঁছেছেন। তবে তার অংশগ্রহণ ঠেকাতে মুসল্লিদের একটি অংশের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বিদের একটি পক্ষ যে কোনো মূল্যে মাওলানা সাদের ইজতেমায় অংশগ্রহণ করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তাদের অভিযোগ, একটি পক্ষ মাওলানা সাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা চালাচ্ছে। দুই পক্ষের পরস্পরবিরোধিতার মধ্যে সাধারণ মুসল্লিরা পড়েছেন অস্বস্তি ও শঙ্কায়। তবে সংকট নিরসনে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে দায়িত্বশীল একটি সূত্র।
আজ থেকে টঙ্গীর তুরাগতীরে শুরু হচ্ছে ইজতেমার প্রথম পর্ব। রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ পর্ব। চার দিন বিরতির পর ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। দুই পর্বের ইজতেমায় অংশ নেবেন ৩২ জেলার মুসল্লিরা।
স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, বুধবার সন্ধ্যা থেকেই দলে দলে ইজতেমা ময়দানে আসছেন মুসল্লিরা। গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি তাবলিগ জামাতের লোকজনের সঙ্গে তার কর্মী বাহিনী নিয়ে কাজ করেছেন। ময়দান পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজে অংশ নিয়েছেন।
বছর তিনেক আগে ভারতে তাবলিগের মুরব্বিদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। তাবলিগের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াসের বংশধর এবং দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের মুরব্বি মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি নিজেকে তাবলিগের আমির হিসেবে ঘোষণা দেন। সেখানকার শূরা সদস্য মাওলানা ইবরাহিম দেওলা, মাওলানা আহমাদ লাটসহ কয়েকজন এর বিরোধিতা করেন। পরে তারা ওই মারকাজ থেকে বেরিয়ে যান। তাবলিগের কেন্দ্রের এ বিভক্তির ঢেউ অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের তাবলিগ জামাতের লোকজনের মধ্যেও আছড়ে পড়ে। কাকরাইল মারকাজ মসজিদের শূরা সদস্যদের মধ্যেও মতপার্থক্য দেখা দেয়। কাকরাইল মসজিদে বর্তমানে মাওলানা সাদের সমর্থক প্রকৌশলী সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামসহ কয়েকজন শূরা সদস্য রয়েছেন।
মাওলানা সাদ বাংলাদেশে আসছেন- এমন খবরে গতকাল সকাল থেকেই বিমানবন্দর এলাকায় অবস্থান নেন বিপক্ষের লোকজন। সর্বশেষ গত ৭ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদ্রাসায় বৈঠক করেন আলেমরা। সেখানে উপস্থিত ২১ জনের মধ্যে ১৩ জনই এবারের ইজতেমায় মাওলানা সাদ কান্ধলভির না আসার পক্ষে মত দেন।
ইজতেমা ময়দানের মুরব্বি প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন জানান, সরকারের হস্তক্ষেপে এবারও ইজতেমা সফল হবে। মাওলানা সাদকে নিয়ে বিতর্কের অবসান হবে।