আগামী ৯ মাসে বিমান ও পর্যটন খাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন আনা হবেঃ চিটাগাং চেম্বারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী
কে এম রুবেল চট্টগ্রাম : বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এ. কে.এম শাহজাহান কামাল এমপি ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার পরিদর্শন এবং চিটাগাং চেম্বার নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। মতবিনিময়কালে মন্ত্রী বলেন-আগামী ৯মাসে বাংলাদেশ বিমান ও পর্যটন খাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন সাধিত হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম। এ সময় চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী, চিটাগাং চেম্বার পরিচালক কামাল মোস্তফা চৌধুরী, ছৈয়দ ছগীর আহমদ, অঞ্জন শেখর দাশ, চেম্বারের সদ্যবিদায়ী পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, বিকেএমইএ’র সাবেক পরিচালক শওকত ওসমান বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে মিয়ানমারের অনারারী কনসাল মোঃ হাকিম আলী, চেম্বার পরিচালকদ্বয় সরওয়ার হাসান জামিল ও মুজিবুর রহমান, মহানগর আওয়ামীলীগ’র উপদেষ্টা শেখ মাহমুদ ইসহাক, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুল হক মিঞা, ৩৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হোসেন মুরাদ, লবণ শ্রমিকলীগ সভাপতি আবদুল মতিন মাস্টার, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারী শ্রমিক কর্মচারী লীগ সভাপতি ইমাম হোসেন, স্বাধীনতা নারী শক্তি সংগঠনের সভানেত্রী অধ্যাপিকা বিবি মরিয়ম ও সাধারণ সম্পাদিকা আমেনা খাতুন উপস্থিত ছিলেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এ.কে.এম শাহজাহান কামাল এমপি চট্টগ্রামকে শিল্পনগরী উল্লেখ করে বলেন-এতদঞ্চলে পর্যটনের অফুরন্ত সম্ভবনা রয়েছে। তাঁর মন্ত্রণালয় কর্তৃক আগামী দিনগুলোতে এ খাতের উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটগুলো চিহ্নিতকরণপূর্বক বিনিয়োগের লক্ষ্যে বেসরকারী উদ্যোক্তাদের সরকারী জায়গা লীজ দেয়া ও চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের রানওয়ে ৮০০ মিটার সম্প্রসারণ করা হবে বলে জানান। মন্ত্রী বিমান ও পর্যটন খাতের বিকাশে স্টেকহোল্ডারদের সাথে মতবিনিময় করার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এ খাতের উন্নয়নে চিটাগাং চেম্বারকে লিখিত প্রস্তাবনা পাঠানোর অনুরোধ জানান।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের আধুনিকায়ন, সম্প্রসারণ ও আরো বেশী আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করা, প্রবাসী শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের বিমান বন্দরে বিশেষ সহায়তা প্রদান, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ সারা দেশে পর্যটন খাতের বিকাশে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, পর্যটন স্পটগুলোতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি, পর্যটন কর্পোরেশনের পুরনো মোটেল ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ, চট্টগ্রামের সাথে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কাপ্তাই ও বান্দরবানের মহাসড়ক ডাবল লেনে উন্নীতকরণ ও পতেঙ্গা বীচকে আধুনিক পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলার দাবী জানান। তিনি চট্টগ্রাম-চিয়াংমাই-ব্যাংকক রুট পুনরায় চালু করা এবং পর্যটন বিকাশের লক্ষ্যে চিয়াংমাই এর সাথে চট্টগ্রামের জয়েন্ট সিটি প্রোগ্রাম চালু করার প্রস্তাব করেন।
চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী পর্যটন শিল্প বিকাশে অর্থায়নসহ বেসরকারী খাতকে অধিকতর সুযোগ প্রদান, হেলথ ট্যুরিজম ও এগ্রো ট্যুরিজম এর উপর গুরুত্বারোপ করেন। চেম্বার পরিচালক কামাল মোস্তফা চৌধুরী বিমানের বিভিন্ন রুটের ভাড়া যৌক্তিককরণ এবং সিডিউল ঠিক রাখার অনুরোধ জানান। পরিচালক ছৈয়দ ছগীর আহমদ চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী এবং ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য ট্যুরিস্ট বাস চালুর আহবান জানান। পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ পর্যটন খাতের বিকাশে সহায়ক নীতিমালার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করে ব্যবসায়ীদের এ খাতে বিনিয়াগে উৎসাহিত করতে উপযুক্ত জায়গা লীজ দেয়ার অনুরোধ জানান। চেম্বারের সদ্যবিদায়ী পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ দেশের ইমেজ বাড়াতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে আরো গতিশীল ও যাত্রীবান্ধব করার উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বিদেশী কর্মী ও পর্যটক আকর্ষণে বিনোদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে জানান। বিকেএমইএ’র সাবেক পরিচালক শওকত ওসমান বৃহত্তর চট্টগ্রামের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের কারণে এখনই স্যাটেলাইট ও ট্যুরিস্ট সিটি নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করার পরামর্শ প্রদান করেন। সভা শেষে মন্ত্রী ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে রপ্তানিমূখী পণ্যের পারমেনেন্ট এক্সিবিশন হল পরিদর্শন করেন।