হবিগঞ্জে র্যাবের অভিযানে ১০টি অ্যান্টি ট্যাংক রকেট লঞ্চার উদ্ধার
ছনি চৌধুরী,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ।
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে র্যাবের অভিযানে ১০টি অ্যান্টি ট্যাংক রকেট লঞ্চার উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারী) দুপুর সোয়া ২টায় র্যাবের মিডিয়া উইং প্রধান মুফতি মাহমুদ এই অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত অভিযানে ১০টি হাই এক্সক্লুসিভ ৪০ এমএম অ্যান্টি-ট্যাংক রকেট লঞ্চার উদ্ধার করা হয়েছে। এই লঞ্চারগুলো ১৫ কিলোমিটার দুরবর্তী স্থান পর্যন্ত কাজ করে। এছাড়া আর কোনো কিছু পাওয়া যায়নি।
সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ওই এলাকাটিতে গোয়েন্দা নজরদারী থাকবে। দুস্কৃতিকারীরা যাতে এই এলাকাকে ব্যবহার করে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে র্যাব সতর্ক রয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রেস ব্রিফিংকালে অন্যানের মাঝে উপস্থিত ছিলেন র্যাব-৯ সিলেট ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার লেফট্যানেন্ট কর্ণেল আলী আয়দার আজাদ আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মনিরুজ্জামান ও বিমান চন্দ্র কর্মকার।
এ সময় হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনীষ চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসম সামছুর রহমান ভূইয়া, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এসএম রাজু আহমেদসহ র্যাব এবং পুলিশের শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর ডিজি অংশ নেয়ার কথা থাকলেও তিনি আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে আসেননি।
প্রসঙ্গত, এর আগে শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে অভিযানে নামেন র্যাব-৯ এর সদস্যরা। এর আগে ২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর ৪র্থ দফার ১ম পর্যায়ে উদ্যানের গহীনের অরণ্যে মাটি খুড়ে ৩টি মেশিন গান, ৪টি ব্যারেল, ৮টি ম্যাগজিন, ২৫০ গুলির ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৮টি বেল্ট ও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি রেডিও উদ্ধার করা হয়।
সর্বশেষ ১৭ অক্টোবর দুপুরে এসএমজি ও এলএমজি’র ৮ হাজার ৩৬০ রাউন্ড, ত্রি নট ত্রি রাইফেলের ১৫২ রাউন্ড, পিস্তলের ৫১৭ রাউন্ড, মেশিনগানের ৪২৫ রাউন্ডসহ মোট ৯ হাজার ৪৫৪ রাউন্ড বুলেট উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া এসএমজি’র ২০টি, এলএমজি’র ৫টি, এসএলআর-এর ৬টি, ত্রি নট ত্রি’র ৪টি, এমএমজি ২টি, পিস্তলের ২৯টি ও জি থ্রি’র ১২টিসহ মোট ৮০টি ম্যাগজিন, ৫টি ওয়াকিটকি ও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি রেডিও সেট উদ্ধার করা হয়।
গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর তৃতীয় দফা অভিযানে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। সে সময় ত্রিপুরা পল্লীর একটি বাড়ির ছাগল রাখার ঘরের নিচে বাঙ্কার থেকে ১৪ বস্তা গোলাবারুদ উদ্ধার করেন র্যাব সদস্যরা। এর মধ্যে ছিল ১১২টি ট্যাংক বিধ্বংসী ৪০ মিলিমিটার রকেট ও ৪৮টি রকেটের চার্জার।
এর আগে, ৩ জুন থেকে ৪ জুন পর্যন্ত প্রথম দফা অভিযান চালিয়ে আটটি বাঙ্কারের সন্ধান পাওয়া যায় সাতছড়িতে। বাঙ্কারগুলো থেকে একটি মেশিনগান, একটি রকেট লঞ্চার, পাঁচটি মেশিনগানের ব্যারেল, ২২২টি কামানের গোলা ও ২৪৮টি রকেটের চার্জার এবং বিভিন্ন ধরনের ১২ হাজার ৯৮৭টি গুলি উদ্ধার করা হয়।
২৯ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় অভিযানে নয়টি এসএমজি, একটি এসএমসি, একটি ৭.৬২ মিলিমিটার অটো রাইফেল, ছয়টি এসএলআর, দুটি এলএমজি, একটি স্নাইপার টেলিস্কোপ সাইট এবং দুই হাজার ৪০০ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। এসব অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় চুনারুঘাট থানা পুলিশ তদন্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।