ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচীর সদস্যদের কেন শিক্ষক পদে নিয়োগ নয় ?
লালমনিরহাট প্রতিনিধি :
ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচীর উপযুক্ত সদস্যদের কেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে ওই পদে তাদেরকে নিয়োগ দিতে সরকারের নিস্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-তাও জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, সংস্থাপন সচিব, শিক্ষা সচিব, অর্থ সচিব, যুব ও ক্রীড়া সচিবকে এই রুলের জবাব দিতে আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচীর সাবেক ৪২ জন সদস্যের দায়ের করা রিট আবেদনে এই রুল জারি করা হয়েছে। ওই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত সোমবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী এ্যাডভোকেট মাজেদুল ইসলাম পাটোয়ারী উজ্জল ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এর্টনি জেনারেল বশির আহমেদ।
হাতীবান্ধা উপজেলার ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচীর সদস্য জাকির হোসেন, আনোয়ার হোসেন মিরু, বিপ্লব চন্দ্র সাহা, সাদেকুল ইসলাম, রেবেকা সুলতানা, খাদিজা বেগম ও খায়রুল ইসলামসহ ৪২ জন এই রিট দায়ের করেন।
জানা যায়, ২০১৩ সালের ১২ মে সারা দেশে ৭ টি জেলার ৮ টি উপজেলার মত লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচীর আওতায় ২ হাজার ১ শত ৮৮ জন বেকার যুবক-যুবতী প্রশিক্ষণ শেষে নভেম্বর মাসে চাকরীতে যোগদান করেন। দুই বছর পর তাদের চাকরীর মেয়াদ শেষ হয়। চাকরীতে থাকার সময় ২০১৪ সালের ৩ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় একটি নীতিমালা জারি করে। এতে বলা হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে পুলভূক্ত শিক্ষক ও ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচীর সদস্যরা অগ্রাধিকার পাবেন। ওই সময় তাদের সমপর্যায়েরে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এর মধ্যে পুলভূক্ত শিক্ষকরা হাইকোর্টে রিট দায়ের করলে তাদের শিক্ষক পদে নিয়োগের বিষয়টি সরকার বাস্তবায়ন করে। কিন্তু ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচীর সদস্যরা আজো উপেক্ষিত রয়েছেন।
রিটের পক্ষের আইনজীবি আইনজীবী মাজেদুল ইসলাম পাটোয়ারী উজ্জল জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নীতিমালায় পুলভূক্ত শিক্ষকদের মতো ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচীর সদস্যদের সমপর্যায়ের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলভূক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া হলেও ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচীর চাকরীজীবীদের নিয়োগ দেয়া হয়নি। এটা বৈষম্যমূলক এবং বে-আইনী। তাই আদালত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন।
লালমনিরহাট ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচী সুবিধাভোগী সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মিরু জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নীতিমালায় পুলভূক্ত শিক্ষক ও ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচীর সদস্যদের সমপর্যায়ের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। কিন্তুপুলভূক্ত শিক্ষকদের সরকারী করণ করা হলেও আমাদের সরকারী করা হয়নি। যে কারণে আমরা আদালতের আশ্রয় নিয়েছি।