কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন সংরক্ষিত বনের ৪০টি স্থানে আগুন
কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন সংরক্ষিত বনের ৪০টি স্থানে আগুন লেগেছে যা নাশকতা বলে ধারণা করছে প্রশাসন।
টেকনাফের সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণয় চাকমা জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ২টা থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
টেকনাফ উপজেলা পরিষদের পশ্চিমে সংরক্ষিত ২৮ একরের এ বন সংলগ্ন রয়েছে ‘নয়াপাড়া’ ও ‘লেদা’ রোহিঙ্গা ক্যাম্প। এ দুই ক্যাম্প থেকে মিয়ানমার সীমান্তের দূরত্ব এক কিলোমিটার।
বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে পৌর এলাকার পাহাড়ে প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকায় জুড়ে আগুন জ্বলতে শুরু করে। আগুন শতাধিক একরের বেশি বনাঞ্চলসহ লোকলয়ে দিকে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। এতে হাজার হাজার গাছপালা, সবজিক্ষেত পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দমকা হাওয়ায় আগুন দাবানলের আকৃতি ধারণ করে ছড়িয়ে পড়ছে।
সহকারী কমিশনার প্রণয় চাকমা বলেন, দুপুরে স্থানীয়দের কাছ থেকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। বনের ৪০টি স্থানে আগুন দেয়া হয়েছে।
বিকাল ৪টা পযর্ন্ত কয়েকটি স্থানের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে— বাকি কয়েকটি পয়েন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা এবং আশপাশের জনবসতিতে যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে দমকল বাহিনীর সদস্যরা।
সহকারী কমিশনার বলেন, কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি, আগুন লাগার ঘটনাটিকে প্রশাসন প্রাথমিকভাবে নাশকতা বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
টেকনাফ স্টেশনের ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা কিরিতি বড়ুয়া বলেন, পাহাড়ে আগুন লাগার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। তারা আগুন নেভাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়া আগুন নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও পাহাড়ের আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। বিকাল ৪টা পযর্ন্ত কয়েকটি স্থানের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। বাকি কয়েকটি পয়েন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা ও তা আশপাশের জনবসতিতে যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে চেষ্টাই করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পায়ে হেঁটে পাহাড় পেরিয়ে ঘটনাস্থলে যেতে একটু সময় লাগছে। ফায়ার সার্ভিসের দু'টি গাড়ি ওই এলাকায় পৌঁছালেও দুর্গম পাহাড়ে উঠতে না পারায় আগুন নেভাতে সমস্যা হচ্ছে।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে গত বছরের অগাস্টের পর থেকে অন্তত সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তারা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া এবং বান্দরবান জেলায় বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় সরকারি জমিতেও ঘর বেঁধেছে অনেকে।
সম্প্রতি বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের সেনা সমাবেশ নিয়ে দুদেশের উত্তেজনার সৃষ্টি হলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) পতাকা বৈঠকের পর শান্ত হয়।