হতাহতদের দ্রুত ফিরিয়ে দিতে নেপালের সর্বোচ্চ সহায়তার আশ্বাস
নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা ইস্যুতে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামালের সঙ্গে বৈঠকে নেপালের সেনাপ্রধান জেনারেল রাজেন্দ্র ছেত্রি বলেছেন, হতাহতদের দেশে পাঠানোর ব্যাপারে নেপালের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ সহায়তা করবে দেশটির সরকার।সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ব্রিফিংয়ে বুধবার এ কথা বলেন তিনি।
ব্রিফিংয়ে জেনারেল ছেত্রি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় হতাহতের স্বজনদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা প্রকাশ করেন এবং নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশিদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নেয়া এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।
সেনাপ্রধান বলেন, এ পর্যন্ত নেপালের সেনাবাহিনী উদ্ধারকাজ ও হতাহতদের ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এরপর আহতদের উন্নত চিকিৎসা দেয়া এবং নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে নেপালে আইন অনুসারে সরকারের সাধ্যে যতটা সম্ভব পুরোটাই করা হবে।বিমানমন্ত্রী বলেছেন, এক্ষেত্রে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মরদেহগুলো সনাক্ত করা। কিন্তু সেজন্য স্বজনদের মরদেহ দেখতে দেয়াটা প্রয়োজন। সেখানে নিহত সবার স্বজন নেপালে আসতে পারেননি। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব সবগুলো মরদেহ বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেয়ার ইচ্ছার কথা জেনারেল ছেত্রিকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
ইতোমধ্যেই ইউএস বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তাদের স্বজনরা। নেপালের হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের অবস্থা খুবই নিম্নমানের বলে অভিযোগ তাদের।
স্বজনদের মতে, বাংলাদেশের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের তুলনায় নেপালের হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের অবস্থা খুবই খারাপ। সেখানে উপযুক্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না দুর্ঘটনায় আহতরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য কোনো দেশে, এমনকি বাংলাদেশেও ফিরিয়ে নেয়ার অনুমতি দিচ্ছে না।
মঙ্গলবার ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্রি ফ্লাইট হতাহতদের স্বজনদের নিয়ে নেপালের কাঠমান্ডুতে পৌঁছায়। কিন্তু এখনো কেউই তাদের নিহত স্বজনদের দেখতে পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ময়না তদন্ত ছাড়া কোন মরদেহ হস্তান্তর করা হবে না।
তাই স্বজনদের সঙ্গে নেপালে জরুরি ভিত্তিতে সফরে আছেন শাহজাহান কামাল। তিনি বলেন, বাংলাদেশ চাইলেও নিজস্ব নিয়মকানুন যথাযথভাবে পালন না করে নেপাল মরদেহ দেশে নিতে দেবে না। তাই প্রক্রিয়াটি যেন দ্রুত সম্পন্ন করে নিহতদের মরদেহ দ্রুত দেশে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা যায় এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়, সেজন্য নেপালের সেনাপ্রধানের সঙ্গে জরুরি বৈঠক আয়োজন করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে বিমানমন্ত্রী টিচিং হসপিটালে দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহগুলো পরিদর্শনে যাবেন। সেখানেই সবগুলো মরদেহ রাখা আছে।