গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে ‘কর্মসৃজন কর্মসূচী’
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রাণালয়ের আওতায় পরিচালিত অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানের কর্মসূচী (ইজিপিপি) দারিদ্র্য বিমোচন, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কার, রাস্তা-ঘাট নির্মাণ এবং প্রান্তিক এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। ওই কর্মসূচীর ফলে একদিকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র লোকেরা অভাব অনটনের সময় কর্মসংস্থানের সুযোগ কাজ পাচ্ছে, অন্যদিকে এলাকার গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ, কাঁচা রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন ও সংস্কার হচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত- গ্রামে কাঁচা রাস্তা-ঘাটের উন্নয়নে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা গেছে। উপজেলার কিছু কিছু এলাকা রয়েছে, যেখানে দেশ স্বাধীনের পরে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। সেখানেও এ কর্মসূচীর মাধ্যমে রাস্তা-ঘাটের দৃশ্যমান ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এই প্রকল্পের সুফল পাচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কাশিয়ানী উপজেলায় চলতি ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে অতিদরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসূচীর প্রথম পর্যায়ে ১৪টি ইউনিয়নে ৪৭টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। যার বরাদ্দ ছিল ১ কোটি ৪৬ লাখ ২৬ হাজার টাকা। উপকারভোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮শ’ ২৮ জন। গত বছরের ৯ ডিসেম্বর থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। যা এ বছরের ৩১ জানুয়ারীতে সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের মো: আনিচ মোল্যা বলেন, আমাদের গ্রামে যাতায়াতের জন্য এতো সুন্দর একটি রাস্তা হবে এটা কখনও কল্পনাও করিনি। কিন্তু সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য যে মাটির রাস্তা তৈরী করা হয়েছে তা প্রশংসনীয়।
কাশিয়ানী উপজেলার বেথুড়ী ইউনিয়নের ধীরাইল গ্রামের রসময় বিশ্বাস (২৫) বলেন, আমাদের গ্রামে ৪০ দিনের কর্মসূচীর মাধ্যমে নতুন রাস্তা নির্মাণ করায় গ্রামবাসীর দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে।
এ ব্যাপারে কাশিয়ানী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো: মশিউর রহমান খান বলেন, এবার কর্মসৃজন কর্মসূচির প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ স্থানীয় সাংসদ (এমপি) কর্ণেল মুহাম্মদ ফারুক খানের কঠোর নজরদারি করায় এলাকার গ্রামীণ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
কাশিয়ানী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: আলাউদ্দিন বলেন, এবার কর্মসৃজন কর্মসূচির কাজে কোন অনিয়মের সুযোগ দেয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে এলাকায় গ্রামীণ অবকাঠামোর ব্যাপক দৃশ্যমান উন্নয়নের পাশাপাশি অতিদরিদ্রদের কর্মহীনদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: তৌফিকুর রহমান (বিপ্লব) বলেন, ইউএনও স্যারের কঠোর নির্দেশ ও দেখ ভাল করায় প্রকল্পের চেয়ারম্যানরা কাজে কোনো অনিয়মের আশ্রয় নিতে পারেনি এবং প্রতিটি প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান।
এ ব্যাপারে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এস এম মাঈন উদ্দিন বলেন, সামাজিক এ কর্মসূচীর মাধ্যমে এ অঞ্চলের প্রান্তিক এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। একই সঙ্গে অনেক হতদরিদ্র মানুষ স্বাবলম্বী হতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি।
কর্মসৃজন কর্মসূচী আর্থ সামাজিক উন্নয়নে হতদরিদ্রদের জন্য উজ্জ্বল ভূমিকা রেখে চলেছে। গরিব-দুঃখী মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে তা তার কর্মকান্ডের মাধ্যমে ফুঁটে ওঠেছে। হতদরিদ্র কর্মসূচী দরিদ্র মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে নিরলস প্রয়াস অব্যাহত রাখছে যা আমাদের জীবনমান উন্নয়নে একটি কার্যকরী ভূমিকা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।