মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যাকান্ডে সাংসদ রানার উপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ
অন্তু দাস হৃদয়, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :
বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী, টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যাকান্ডের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ তৃতীয় বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ( ২১ মার্চ) বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়ার আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে এমপি আমানুর রহমান খান রানাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে সাক্ষ্যগ্রহণ ও বাদী নাহার আহমদকে জেরা শুরু হয়।
এ দিন বিচারক মামলার বাদী নাহার আহমদের আংশিক জেরা সমাপ্ত করেন এবং আগামী ১৮ এপ্রিল মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে চাঞ্চল্যকর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর এমপি রানা গত ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এই আদালতেই আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।
আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার-১ আছেন। বেশ কয়েক দফা উচ্চ আদালত ও নিন্ম আদালতে আবেদন করেও জামিন পাননি তিনি।
এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মনিরুল ইসলাম খান জানান, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলার বাদী নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ, ছেলে আহমেদ মজিদ সুমন ও মেয়ে ফারজানা আহমেদ মিথুনের হাজিরা নেয়া হয়।
এ ছাড়াও কারাগারে আটক আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী ও মো. সমিরকে আদালতে হাজির করা হয় এবং জামিনের থাকা অপর তিন আসামি মাসুদুর রহমান, ফরিদ আহম্মেদ ও নাসির উদ্দিন নুরু আদালতে হাজির হয়।
এর আগে টাঙ্গাইল কারাগার থেকে এ হত্যা মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাংসদ আমানুর রহমান খান (রানা)’কে আদালতে আনা হয়।
তার উপস্থিতিতে বুধবার বেলা ১১টার দিকে টাঙ্গাইল প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালেরত বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এজলাসে ওঠেন। পরে তৃতীয় দফায় ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও বাদীর জেরা শুরু হয়।
আদালতে মামলার বাদী ও নিহতের স্ত্রী নাহার আহমদের জেরা অনুষ্ঠিত হয়। পরে আদালত বাদির আংশিক জেরা গ্রহণের পর আগামী ১৮ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তীতে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে এবং ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এমপি রানা ও তার তিনভাইসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।