আদালতের নির্দেশে দুদকের তদন্ত টিম মাঠে
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
সরকারী করণের অপেক্ষায় থাকা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মাহতাব উদ্দীন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল ও দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আশরাফ উদ্দীনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঝিনাইদহ বিজ্ঞ স্পেশাল জজ আদালতে ওই কলেজের অধ্যক্ষ ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান মামলাটি করেন। যার নং ১০০৮/১৭। অভিযোগটি ফৌজদারী মিস (স্পেশাল) মামলা হিসেবে রেজিষ্ট্রিভুক্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ১৩ উপবিধি ২ এর নির্দেশনা মতে ঝিনাইদহের বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ৭৩২১ স্মারকে পাঠানো হয়। চীফ জুডিশিয়াল আদালত বাদীর অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে বাদীর অভিযোগ আসামী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজিদ মন্ডল ও সহকারী অধ্যাপক আশরাফ উদ্দীন কোন রুপ আইনের তোয়াক্কা না করে অধ্যক্ষের রুমের তালা ভেঙ্গে রুম দখল, নেম প্লেট ভাংচুর, হাজিরা খাতা থেকে অধ্যক্ষের নাম মুছে ফেলা ও ষ্টীল কেবিনেটের তালা ভেঙ্গে ভাউচার লুট করেছেন। এরপর তারা অস্তিত্বহীন ও আইন বহির্ভুত একটি অডিট টিম গঠন করে ২০০৮ সালের ৩১ জানুয়ারী থেকে ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অনার্স ভবন নির্মানে ১৫ লাখ ২২ হাজার টাকা আত্মসাতের কল্পিত রিপোর্ট তৈরী করে কলেজ অধ্যক্ষ ড. মোঃ মাহবুবুর রহমানকে চুড়ান্ত বরখাস্তের ছক তৈরী করেন। এই অপকর্ম বৈধ করতে কালীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফ সরকারকে অডিট টিমের সদস্য করা হলেও তিনি তাতে সায় দেন নি এবং অডিট রিপোর্টে সাক্ষর করা থেকে বিরত থাকেন। ফলে কলেজ সভাপতির শুশ্বর শরিফুল ইসলাম ও শিক্ষক প্রতিনিধি আশরাফ উদ্দীনের সাক্ষরযুক্ত ওই ভুয়া অডিট রিপোর্ট প্রস্তুত করে বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করেন।
আসামী দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আশরাফ উদ্দীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ষ্টীল কেবিনেট ভাঙ্গা ও জাল ভাউচার তৈরীতে সহায়তা করেন বলে মামলার আর্জিতে উল্লেখ করা হয়। দুই আসামী পরস্পর যোগসাজসে বাদী অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমানকে চাকরী থেকে চুড়ান্ত ভাবে বরখাস্ত ও তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমানে ব্যর্থ হয়ে অধ্যক্ষের রুমের তালা ভঙ্গে ভিতরে অনধিকার প্রবেশ করে দরজায় লাগানো অধ্যক্ষের নেমপ্লেট অপসারণ, হাজিরা খাতা থেকে ফ্লুইট দিয়ে অধ্যক্ষের নাম মুছে ক্ষমতার অপব্যবহার পুর্বক বাদীর সাক্ষর করা ভাউচার সরিয়ে জাল ও ভুয়া ভাউচার অন্তুর্ভুক্ত করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এদিকে অধ্যক্ষ ড. মোঃ মাহবুবুর রহমানের মামলার প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকা অফিসের নিদের্শে অভিযোগটি তদন্ত করছেন সংস্থটির যশোর অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক সৌরভ দাস। তিনি ইতিমধ্যে কলেজে এসে তদন্ত শুরু ও কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের সাক্ষ্য নিয়েছেন।
এ সংক্রান্ত কলেজের কাগজপত্রও পর্যালোচনার জন্য তলব করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনার আলোকে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল গাফ্ফার জানান, বিষয়টি যেহেতু তিনি তদন্ত করছেন না তাই বিস্তারিত এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। উল্লেখ্য আদালতে দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের ডিজি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমানকে স্বপদে বহাল করতে একাধিকবার চিঠি ইস্যু করলেও তাকে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি। ফলে পদে পদে আইন লংঘনে মাহতাব উদ্দীন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজিদ মন্ডলের খুটোর জোর নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি জানতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজিদ মন্ডলের মুঠোফোনে বৃহস্পতিবার একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।