ব্যবহারকারীদের অজান্তে তথ্য সংগ্রহ করে শাওমি
ডিজাইন ও সাশ্রয়ী মূল্য দিয়ে ব্যবহারকারীদের নজর কাড়লেও চীনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস নির্মাতা শাওমির বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীদের অজান্তে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিজেদের গোপনীয়তা নীতি অনুযায়ী এ কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি।
শাওমি তাদের গ্রাহকদের যেসব তথ্য সংগ্রহ করতে পারে, তা নিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক অনলাইন পোর্টাল গেজেটনাউ’তে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।
এ প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, শাওমি’র ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত মৌলিক তথ্য, কন্ট্যাক্ট লিস্ট, ব্যাংকিং ও ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, কর্মক্ষেত্রের বিস্তারিত তথ্য, বাসার ঠিকানা, ডিভাইসের তথ্য, গ্রাহকের অবস্থান, ইত্যাদি তথ্যাদি সংগ্রহ করে তাদের সার্ভারে রেখেছে।
ব্যক্তিগত মৌলিক তথ্য
শাওমি তাদের প্রাইভেসি নীতি অনুযায়ী ডিভাইস ব্যবহারকারীর নাম, জন্মতারিখ, লিঙ্গ, ভাষাসহ নানা ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। এছাড়া ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানটিকে যেসব তথ্যে প্রবেশাধিকার দিয়ে থাকেন, তার বাইরেও বিভিন্ন তথ্য নিতে পারে প্রতিষ্ঠানটি।
কন্ট্যাক্ট লিস্ট
শাওমির ডিভাইসের সঙ্গে অনেক সেবা বান্ডল অফার হিসেবে দেয়া হয়। এসব সেবা ব্যবহারের জন্য তাদের প্রাইভেসি নীতিমালা অ্যালাউ করলে ফোনে থাকা মোবাইল নম্বর, ইমেইল ঠিকানা ও ফোনে থাকা অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করতে পারবে শাওমি।
ব্যাংকিং ও ক্রেডিট কার্ডের তথ্য
শাওমির প্রাইভেসি নীতিমালায় স্পষ্ট করে বলা আছে, কোনো ব্যবহারকারী মিডটকম বা প্রতিষ্ঠানটির অন্য প্লাটফর্ম থেকে কোনো কিছু কেনেন, তাহলে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, অ্যাকাউন্টধারীর নাম, ক্রেডিট কার্ড নম্বর ও অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে শাওমি।
কর্মক্ষেত্রের বিস্তারিত তথ্য
ডিভাইস ব্যবহারকারী কোথায় কাজ করেন, কোন পদে কাজ করেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা কী ও কী ধরনের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, সে বিষয়ে সব তথ্য নিতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।
বাসার ঠিকানা
বাসার ঠিকানার পাশাপাশি ডিভাইস ব্যবহারকারীর জাতীয় আইডি, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও অন্যান্য সনদের তথ্যও জমা রাখতে পারবে শাওমি। এমআই ক্লাউডে অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ই গ্রাহকদের জানিয়ে দেয়া হয় কন্ট্যাক্টস, মেসেজ ও ডিভাইস সম্পর্কে কী কী তথ্য নেয়া হবে।
ডিভাইসের তথ্য
ব্যবহারকারীর ডিভাইসে থাকা বিভিন্ন তথ্য নিতে পারে শাওমি। ডিভাইসের আইএমইআই নম্বর, আইএমএসআই নম্বর, এমএসি ঠিকানা, সিরিয়াল নম্বর, এমআইইউআই ভার্সন ও অন্যান্য তথ্য নিতে পারে শাওমি। এমআই ক্লাউডের সঙ্গে মোবাইল সিঙ্ক করা মানে ফোনে থাকা ছবি, ভিডিও ও মেসেজ শাওমির জিম্মায় রেখে দেয়া। আর এসব নিজেদের গোপনীয়তা নীতিমালার আলোকে করে প্রতিষ্ঠানটি।
গ্রাহকের অবস্থান
ডিভাইস ব্যবহারকারীর অবস্থান-সংশ্লিষ্ট তথ্য রাখে শাওমি। কান্ট্রি কোড, সিটি কোড, মোবাইল নেটওয়ার্ক কোড, মোবাইল কান্ট্রি কোড, সেল আইডেন্টিটির তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও ব্যবহারকারী কোন দ্রাঘিমাংশে রয়েছেন ও সেখানকার সময়ের পার্থক্য জেনে নিতে পারে।
শাওমির ডিভাইস ব্যবহারকারী চাইলে তথ্য নেয়ার অপশন বন্ধ রাখতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে শাওমির কোনো সেবার হালনাগাদ পাওয়া যাবে না।