সাকুরা গার্মেন্টস মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশের সামনেই শ্রমিক মারধরের অভিযোগ আহত – ৬
সদর উপজেলার শিবু মার্কেট এলাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় বেতনের দাবীতে বিক্ষোবরত শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এনে উল্টো শ্রমিকদের মারধরে মালিকপক্ষকে উৎসাহ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে ও। গতকাল সোমবার সকালে স্থানীয় সাকুরা গার্মেন্সে এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে দুপুর ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ ও বিকে এমই এর সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান। এসময় তিনি শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করে তাদের শান্ত করতে মালিক পক্ষতে নির্দেশ দেন। অন্যথায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে বলেন। পরে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মালিকপক্ষের সাথে কথা বলে গার্মেন্টস বন্ধ ঘোষণা করেন।
জানাযায়, ঈদের পূর্বে থেকেই পোশাক কারখানার কয়েকজন শ্রমিকের বেতন আটকে রাখে মালিকপক্ষ। এনিয়ে গত রবিবার আন্দোলন করে। সোমবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলে সাকুরা গার্মেন্টসের মালিক পক্ষের সন্ত্রাসীরা আন্দোলনরত শ্রমিকদের খুঁজে বের করে মারতে থাকে। এসময় ৬ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পর শ্রমিকরা এক হয়ে সড়কে নেমে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেতন ভাতার দাবীতে মালিকপক্ষের সাথে কথা হলে তারা সোমবার সবাইকে গার্মেন্টসে আসতে বলে। এদিন সকালে শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করলে কারখানার মেইন গেইট আটকে দেয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তারক্ষীরা। এরপর সেখানে পূর্বে থেকে অবস্থানরত মালিকপক্ষের পেটোয়া বাহিনী শ্রমিকদের উপড় চড়াও হয়ে তাদের বেধরক মারধর শুরু করে। মূহুর্তের মধ্যেই এ খবর চারিদিকে রটিয়ে গেলে প্রতিষ্ঠানের সামনে এসে ভীড় করে অন্যান্য শ্রমিকরা। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে পুলিশের সামনেই মালিকপক্ষের পেটোয়া বাহিনী নিরীহ শ্রমিকদের মারধর করলেও পুলিশ সেখানে কোন ভূমিকা পালন করেনি বলে জানায় শ্রমিকরা।
মারধরের ঘটনায় আহত ৫ শ্রমিককে শহরের খানপুর হাসপাতালে প্রাথমি চিকিৎসা দেয়া হয়। এদের মধ্যে সজীব নামে এক পোশাক শ্রমিক গুরুতর জখম হয়। তার মাথায় ১৫টি সেলাই লেগেছে বলে ৩০০ শয্যার জরুরী বিভাগ সূত্রে জানা যায়।
অপরদিকে ফতুল্লা মডেল থানা এবং শিল্প পুলিশ এসে আন্দোলনরত শ্রমিকদের আলোচনায় বসার আশ্বাস দিলে আন্দোলন থেকে সরে দাড়ায় বিক্ষোব্ধ শ্রমিকরা। এসময় সেখানে বিকেএমইএদর সহ সভাপতি হাতেম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সরফুদ্দিনসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সরফুদ্দিন জানান, শ্রমিকরা মারধরের প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভ করলে পুলিশ তাদের আশ্বাস দিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। বিষয়টি মিমাংসা না হওয়া পর্যন্ত গার্মেন্টস বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।