পুলিশী বাঁধায় পন্ড কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মানববন্ধন
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি 4TV
পুলিশী বাঁধায় পন্ড হলো গণসংহতি আন্দোলনের পূর্বঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের উপর হামলা, গ্রেফতার, নির্যাতন ও প্রশাসনের নীরব ভূমিকার প্রতিবাদে বুধবার বিকেল ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানবন্ধন কর্মসূচী পালন করার কথা ছিল। পরে পুলিশী বাঁধায় মানববন্ধন পন্ড হয়ে গেলে প্রেস ক্লাবের ভেতরে সংবাদ সম্মেলন করে গণসংহতি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। বিকেল ৪টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকলে বাঁধা দেয় পুলিশ এবং প্রেস ক্লাবের সামনে দাড়াতে নিষেধ করে। লিখিত কোন অনুমতি ছাড়া কোন মানববন্ধন কিংবা সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে জানায় পুলিশ। এসময় ব্যানার বের করে নেতাকর্মীরা দাঁড়াতে চাইলে পুলিশের সাথে এক প্রকার ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় পুলিশ ব্যানার কেড়ে নেয় এবং কোন প্রকার কর্মসূচি করা যাবে না বলে জানায়। পরে মানববন্ধনে আসা নেতাকর্মীরা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা বাসদের সমন্বয়ক নিখিল দাস, প্রবীন সাংবাদিক অহিদুল হক খান, সমগীতের কেন্দ্রীয় সভাপতি অমল আকাশ, ছড়াকার আহমেদ বাবলু,্ গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, পপি রানী সরকার, মশিউর রহমান রিচার্ড সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এসময় নেতৃবৃন্দ বলেন, কিছুক্ষন আগে পুলিশ আমাদের মানববন্ধন করতে দেয়নি। ১৯৭২ সালের সংবিধানকে বাংলাদেশ সরকার ও নারায়ণগঞ্জের পুলিশ লঙ্ঘন করেছে। আমি সকলকে আহ্বান করবো সংবিধানকে সমুন্নত রাখার জন্য মাঠে নামতে। কোটা পদ্ধতি আজকের সময়ে প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। ১৯৭১ সালে সকল মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছে। যারা মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী তাদেরকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে, অনেকগুলো বিচার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী পক্ষ ছাড়া সকলেই মুক্তিযোদ্ধা। যদি সরকার ৭২ এর সংবিধান মানে তাহলে অবশ্যই সংবিধান অনুযায়ী পুলিশের এই হামলা বর্বরোচিত। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
তারা আরো বলেন, যখন কোটা সংস্কারের মতো একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রদেরকে মারা হয় তখন আমরা আমাদের সন্তানকে দেখি সেখানে। আমরা দেখি আমাদের সন্তান সেখানে মার খাচ্ছে। তারা সত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই রাষ্ট্রে একটি কথা বলা যায় না। যখন নারায়ণগঞ্জে কোটা সংস্কারকে সংহতি জানিয়ে আন্দোলন হচ্ছিল তখন কোটা সংস্কারের কারণে তোলারাম কলেজে সাংবাদিককে পিটিয়েছে ছাত্রলীগ। বিভিন্নভাবে দেশের মানুষের মেধার বিকাশে বাধা দিচ্ছে সরকার। কোটা বাতিলের কথা বলে আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও প্রজ্ঞাপন জারি করছে না সরকার। যারাই এই বিষয়ে কথা বলতে যাচ্ছে তাদেরকে জামাত-শিবিরের ট্যাগ লাগিয়ে দিচ্ছে। আমাদের শন্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হয়েছে। লাগানো মাইক খুলে ফেলতে হয়েছে। ব্যানার ছিনিয়ে নিয়েছে। এভাবে চলতে পারে না। সরকার ভাবছে এই ক্ষমতার মসনদ আজীবন টিকিয়ে রাখবে। ইতিহাস বলে দেয় ক্ষমতা চিরদিন থাকে না, স্বৈরাচার কোন শাসক বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনা।