পদপ্রত্যাশী কাউকেই পছন্দ হয়নি প্রধানমন্ত্রীর
সদরুল অাইন 4TV :
ছাত্রলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কাউকেই পছন্দ নয় প্রধানমন্ত্রীর। এদের হাতে নির্বাচনের আগে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে গেলে বদনাম হতে পারে, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমস্যাও হতে পারে।
এ কারণেই নতুন মুখ খুঁজছেন প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র মতে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে এমন কাউকে খুঁজছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে নূন্যতম অভিযোগ নেই। একদম ক্লিন। যে ৩২৩ জন ছাত্রলীগের প্রধান দুই পদে দায়িত্ব গ্রহণে আগ্রহী তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কিছু না কিছু অভিযোগ রয়েছে।
এজন্য প্রধানমন্ত্রী পদ প্রত্যাশী কাউকেই সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদ দিতে আগ্রহী নন। তিনি খুঁজছেন নতুন মুখ। এ কারণেই, ছাত্রলীগের কমিটি গঠন অনেক বিলম্বিত হতে পারে। এমনকি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত ছাত্রলীগের কমিটি গঠন নাও হতে পারে বলে একটি সূত্র ইঙ্গিত করেছে।
বুধবার ছাত্রলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৩২৩ জনকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু তাঁদের কাউকেই ছাত্রলীগের নেতৃত্বের জন্য যোগ্য মনে করেননি তিনি। এমনকি, ঐ ৩২৩ জনের মধ্যে একজনকেও পাওয়া যায়নি যে, নিজেদের মধ্যে হট্টগোল দৃঢ়তার সঙ্গে থামাতে পারে। এতে প্রধানমন্ত্রী কিছুটা হতাশই হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র বলছে, বর্তমানে যে কোটা আন্দোলন তা সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ নিচ্ছে। এই সময়ে ছাত্রলীগের কমিটি হলে, ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হবে। আবার কোটা আন্দোলনেও অনেক ছাত্রলীগ নেতার জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে বিলম্বের এটি একটি কারণ।
গত দুই মাস ছাত্রলীগের কমিটি নেই। এই সময় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসের অভিযোগও অনেক কম। কমিটি হলেই ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত প্রচারণা শুরু হতে পারে। নির্বাচনের আগে এরকম প্রচারণা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নেতিবাচক সমালোচনার খোরাক হতে পারে। এ কারণেও কমিটি গঠন বিলম্বিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের অনেকেই মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত হয়তো নির্বাচনের আগে পর্যন্ত কমিটি গঠন স্থগিত থাকতে পারে। অবশ্য আওয়ামী লীগের অন্য একটি সূত্র বলছে, সেটি বোধহয় প্রধানমন্ত্রী করবেন না। তবে প্রধানমন্ত্রী যে ছাত্রলীগে আনকোরা নতুন মুখ খুঁজছেন তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই কারও। যে ৩২৩ জন পদপ্রত্যাশী তারা সবাই পদের জন্য নেতাদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। বিভিন্ন মহলে দেন দরবার করছেন। এসব খবর প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসেছে। এজন্য তাঁদের বাদ দেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী তাদের একবার পরখ করে নিতেই ডেকেছিলেন গণভবণে।
ছাত্রলীগের নতুন কমিটি যখনই হোক যারা পদ লাভের জন্য নিজেদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা কেউ সেই কমিটিতে থাকছেন না।
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, মেধাবী কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের নেতৃত্বের জন্য প্রধানমন্ত্রী পছন্দ করেছেন। এদের পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে। এদের মধ্যে থেকেই কাউকে হয়তো ছাত্রলীগের দায়িত্ব তুলে দেবেন শেখ হাসিনা। কিন্তু তাঁর আগে তিনি নিশ্চিত হতে চাইছেন, এরা কেউ লোভে বিক্রি হবে না। আদর্শে অটল থাকবে।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র বলছে, এবার ছাত্রলীগের কমিটি হবে অকল্পনীয়। যাদের নিয়ে কেউ ভাবেনি এমন কেউ আসবে নেতৃত্বে। শেখ হাসিনা একটি চমক দেবেন।